- বিশেষ ক্ষমতা আইনে ১৭ টি মামলা ৭টি জিডি চোরাচালান প্রতিরোধে জৈন্তাপুর মডেল থানা পুলিশের সাফল্য - September 25, 2023
- জামালপুর জেলার নিবার্চনী হালচাল - September 23, 2023
- সরিষাবাড়ীতে সংস্কার হলো রাস্তা, কমলো জনদূভোর্গ - September 23, 2023

আবু মোতালেব হোসেন,নীলফামারী প্রতিনিধিঃ
নীলফামারীর নেসকো ডোমার-ডিমলা বিদ্যুৎ সরবরাহ কেন্দ্র ডোমারের ১২ কর্মচারীকে চাকুরিচ্যুত করা হয়েছে। ফলে চাকুরিচ্যুতরা পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে।
নেসকো’র ডোমার বিদ্যুৎ সরবারহ কেন্দ্র কার্যালয়ের কিছু অসাধু কর্মকর্তা তাদের অনিয়ম ও দূর্নীতির দায় কর্মচারীদের ঘাড়ে চাপিয়ে তাদের চাকরী থেকে বাদ দিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
চাকুরিচ্যুত পিচরেট (মিটার রিডার ও বিল বিতরনকারী) কর্মচারীদের মধ্যে জাকির হোসেন, মিলন ইসলাম, সুজন ইসলামসহ কয়েকজন কর্মচারী অভিযোগ করে বলেন, নর্দান ইলেক্ট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানী(নেসকো) লিমিটেড পিডিবির কাছ থেকে দায়িত্ব নেয়ার পর নীলফামারীর ডোমার কার্যালয়ের কর্মকর্তরা সরকারী বরাদ্দের মেরামতের জন্য বৈদ্যুতিক নানা প্রকার সরাঞ্জম চুরি করে বাহিরে বিক্রি করে দেন। সরকারী নিয়ম নিতির তোয়াক্কা না করে মিল কল-কারখানার মালিকদের বাড়তি সুবিধা দিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। বিদ্যুতের ইউনিট চুরি করাসহ বিভিন্ন অনিয়ম ও সীমাহীন দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েন তারা। তাদের দুর্নীতির ফলে পাল্লা দিয়ে বাড়ে সিষ্টেম লস(অতিরিক্ত বিদ্যুৎ ব্যবহার)। পরে এই সিষ্টেম লসের মাত্রা নিয়ন্ত্রনে রাখতে দায়িত্বরত কর্মকর্তারা প্রথমে মৌখিক ও পরে তাদের ইচ্ছে মত অফিস আদেশ জারি করে সাধারন গ্রাহকদের মাথায় ভৌতিক বিল চাপায়। ভৌতিক বিলের কারনে দিশেহারা গ্রাহকরা ওই কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন(দুদক)কে অভিযোগ করেন। দুদক ১৩৪জন গ্রাহকের অভিযোগ আমলে নিযে ২০১৮ সালের ২৩ অক্টোবর ডোমারে গণশুনানির আয়োজন করে। এ সময় দুদক কর্মকর্তারা এই দুর্নীতির সাথে জড়িত নেসকো কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলে জানান। নেসকো’র কর্মকর্তারা অবস্থা বেগতিক বুজতে পেরে তরিঘড়ি করে নিজেরাই প্রহসনমূলক তদন্ত করেন। তদন্তে গ্রাহক হয়রানী, অতিরিক্ত বিল ও ভৌতিক বিল করার অভিযোগ কর্মচারীদের উপড় চাপিয়ে ১২ জন পিচরেট(মিটার রিডার ও বিল বিতরনকারী)কে চাকুরিচ্যুত করে। মিটার রিডার মিলন ইসলাম বলেন, ডোমার বিদ্যুৎ সরবরাহ কার্যালয়ের সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী সাইফুল ইসলাম মন্ডল বিভিন্ন অনিয়ম করে আমাদের ঘাড়ে দোষ চাপিয়েছেন। তিনি মিল কল-কারখানা মালিকদের অনৈতিক বৈদ্যুতিক সুবিধা দিয়েছেন এবং নতুন গ্রাহকদের বিদ্যুতের সংযোগ দেয়ার পরেও তাদের নামে দির্ঘমাস বিল চালু করেননি। যার কারনে সিষ্টেম লসের মাত্রা ৫০ শতাংশে গিয়ে পৌছায়। এই পরিস্থিতে নিজ চাকরি বাচাতে গ্রাহকদের ওপর ভৌতি বিল চাপানোর জন্য আমাদের(মিটার রিডার)দের তাগিদ দেন। ২০১৭ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর দাপ্তরিক আদেশ জারি করে সাধারন গ্রাহকদের ব্যবহƒত লোডের ওপর এশ ইউনিট করে বেশি বিল করার জন্য মিটার রিডারদের বাধ্য করান।সেই আদেশ পালন করতে গিয়ে ১২ জন পিচরেট (মিটার রিডার ও বিল বিতরনকারী) আজ চাকুরিচ্যুত। অথচ দুদকে করা গ্রাহকদের ১৩৪টি আবেদনের কোনটিতে (মিটার রিডার ও বিল বিতরনকারী)দের কোন অভিযোগ ছিলোনা। তবুও মিল কলকারখানা মালিকদের অনৈতিক সুবিধা, গ্রাহকদের কাছ থেকে অতিরিক্ত বিল আদায়সহ সকল অনিয়মের দায় পিচরেট কর্মচারীদের ওপর চাপিয়ে ডোমার বিদ্যুৎ সরবরাহ কার্যালয়ের সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী সাইফুল ইসলাম মন্ডল তরিঘড়ি করে বদলি নিয়ে চলে যান। এ বিষয়ে সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী সাইফুল ইসলাম মন্ডল মুঠোফোনে বলেন, আমি বদলি জনিত কারনে রাজশাহীতে আছি অফিস আদেশ জারি সম্পর্কে আমার কিছুই মনে নেই। কাগজপত্র না দেখে কিছু বলতে পারবোনা। চাকরিচ্যুত পিচরেট কর্মচারী জাকির হোসেন বলেন, দীর্ঘ ২৩ বছর চাকরি করার পর কোন প্রকার নোটিশ ছাড়াই অবৈধভাবে চলতি বছরের ১০ ফেব্রুয়ারী আমাদেরকে চাকুরিচ্যুত করা হয়েছে। তিনি বলেন, আমাদের ঘরে খাবার চাল নেই, সন্তাদের স্কুলের পড়ালেখা বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম, অনেকের ঘরে অসুস্থ্য রোগি আছে টাকার অভাবে তাদের চিকিৎসা বন্ধ হয়ে গেছে, আমরা না খেয়ে মানবেতর জীব যাপন করছি, আমাদের রুটি রুজির কোন ব্যবস্থা নেই। এ বিষয়ে নেসকো ডোমার কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী ইউসুফ আলী বলেন, এই ইউনিটে শুরু থেকেই বিভিন্ন সমস্যা। দীর্ঘদিন অভার বিলিং হওয়ার কারনে গ্রাহকরা ক্ষিপ্ত হয়ে দুদকে অভিযোগ করেছেন। আমরা সেই সমস্যগুলি সমাধানের চেষ্টা করছি। ১২ পিচরেট কর্মচারীকে আমি ডোমার অফিসে যোগদান করার আগেই চাকুরিচ্যুত করা হয়েছে। মহামান্য সুপ্রিম কোর্টেও হাইকোর্ট ডিভিশনে পিচরেট কর্মচারীরা তাদের চাকুরী স্থায়ী করনের দাবীতে ২০১৭ সালে রিট করেন। যাহার রিট পিটিশন নং-৫৯২৫/২০১৭এন। অথচ রিট পিটিশনকারীদের কোন প্রকার নোটিশ ছাড়াই চাকুরিচ্যুত করা হয়। আর তাদের অন্যায়ের সমর্থন দেয়া কয়েকজন পিচরেট(মিটার রিডার ও বিল বিতরনকারী) কে চাকুরিচ্যুত না করে বহাল রাখেন। যারা এখনো তাদের দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন।