মানুষের মন জয় করেছেন গরিবের ডাক্তার-মিশু

0

সেলিম রেজা, স্টাফ রিপোর্টার বগুড়া ঃ ডাক্তার শব্দটির কথা শুনলে একটা বিশ্বাস, নির্ভরতার কথা মনে হয়। সৃষ্টিকর্তার একটা রুপ ডাক্তারের মাধ্যমেই ফুঁটে ওঠে। হাজারো ব্যবসায়িক ডাক্তারের মাঝে প্রকৃত ডাক্তারের সংখ্যা নিতান্তই কম। ইদানিং ডাক্তার শব্দটির কথা শুনলে অনেকেই আঁতকে ওঠে, যেন কসাইয়ের আরেক রুপ।

কিন্তু শাজাহানপুরের লোকে তাঁকে চেনে গরিবের ডাক্তার নামে। প্রতি শুক্রবার ফ্রি রোগী দেখছেন। দীর্ঘ ২ বছর ধরে গরিব, অসহায় মানুষের সেবা দিয়ে যাচ্ছে শাজাহানপুরে। শাজাহানপুরের গন্ডি পেরিয়ে এখন আবার শেরপুর উপজেলার ফুলবাড়ীও ফ্রি রোগী দেখেন। শুধু রোগী ফ্রি নয় বরং চাকুরীর অর্ধেক টাকায় ঔষধ কিনে গরিব রোগীদের মাঝে বিলিয়ে দেন। নানা জায়গা থেকে আসে তারা। বড় অংশই ভ্যানচালক, রিক্সাচালক, দিনমজুর বা এ রকম পেশার লোক। ২০১৭ সালে টিএমএসএস মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাস করে ২০১৭ সাল থেকেই এই মহৎ কাজটি করেন।

শাজাহানপুরে গরিবের ডাক্তার বলতে ডাঃ মেহেরুল আলম মিশুকে অনেকেই বোঝেন। সত্যিকার অর্থে গরিবের ডাক্তার কিভাবে বোঝা যাবে?। গরিবের দূঃখ যে বুঝবে, যে ভিজিট নেবেনা অথবা যা দেবে তাই নেবে। ভিজিট নেবেনা এমন ডাক্তার কমই খুঁজে পাওয়া যায়। ইদানিং ডাক্তারদের নতুন ব্যবসা শুরু হয়েছে ঔষধ কোম্পানির সাথে চুক্তি করে গাড়ি, বাড়িসহ সপ্তাহ অথবা মাস শেষে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেওয়া। গরিবের ডাক্তার বনে যায়।

শাজাহানপুর মেহেরুল আলম মিশু ডাক্তার যার কথা না বললেই না। অসাধারণ ব্যক্তিত্ব পরায়ণ একজন মানুষ। প্রয়োজনের বাইরে কথা বলতে পছন্দ করেন না। বগুড়া সামছুন্নাহার ক্লিনিকের একজন মেডিকেল অফিসার ও বগুড়া টিএমএসএস কলেজ এবং বগুড়া রফাতুল্লাহ কমিউনিটি হাসপাতালের অর্থোপেডিক্স ও ট্রমাটোলজি বিভাগের ডাক্তারদের মধ্যে একজন তিনি। বেতনের অর্ধেক টাকায় ঔষধ কিনে গরিব রোগীদের মাঝে বিলিয়ে দেন। শুধু ডিগ্রী নয় জ্ঞানে, গুণে, হাত যশে মহান এই মানুষটি জয় করছেন মানুষের মন। কেননা, কোন ঔষধ কোম্পানির সাথে নেই তার অবৈধ লেনদেন। তাছাড়া অপ্রয়োজনীয় ঔষধ লিখে ভিত্তি নষ্ট করতে চাননা তিনি। এমন সৎ ডাক্তার সংখ্যায় কম। নিয়মিত ডিউটি করেন। ডিউটি শেষে প্রাইভেট প্রাকটিসও করেন কিন্তু হাসপাতালের বাইরে বাড়তি চাকরি করেন না। তাই বলে কেউ ডাকলে যাননা তা নয়।

ডাঃ মিশু বলেন, আমার কাছে কোন ভিজিটের টাকা দিতে হয় না, একজন গরিব মানুষ যে টাকা ভিজিট দেবে সেই টাকায় যেন ঔষধ কিনে খেতে পারে। সপ্তাহের বাঁকি দিনগুলোর ভিজিট নির্ধারিত না থাকলেও যে যা দেন, তা একটি ফান্ডে রেখে দেন তা বিভিন্ন উৎসবে গরিব অসহায়, সুবিধা বঞ্চিত মানুষের মাঝে বিলিয়ে দেন। মানুষ তাকে চিনতে হলে তার কাজের গুণেই চিনবেন বলে জানান।

সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমার বাবা-মা দুজনই ইনকাম করেন আমার টাকা তাদের নিতে হয় না বরং তাদের নিকট হতে আমি টাকা নিয়ে অনেক সময় ঔষধ কিনে গরিব অসহায়দের সাহায্য করি। ডাক্তার মিশু বয়সেও বেশ নবীন, নেই কোন অহংকার, তার সাথে কথা বললেই তা স্পষ্ট হয়ে ওঠে। তার বাবা একজন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও মা সরকারী চাকুরিজীবী। বাবা-মার একমাত্র সন্তান ডাক্তার মিশুর জীবনের লক্ষ্য মহান এই পেশায় মানুষের সেবা করে যাবেন আজীবন। সাদা মনের এই অসাধারণ মানুষটি সত্যিকারের গরিবের ডাক্তার।

Leave A Reply