আবরার হত্যায় বুয়েটের ২৬ শিক্ষার্থী আজীবন বহিষ্কার

ঢা‌বি প্র‌তি‌নি‌ধি

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে শিবির সন্দেহে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় ‌বিশ্ব‌বিদ্যালয় থে‌কে ছাত্রলীগের নেতাসহ ২৬ শিক্ষার্থীকে আজীবন বহিষ্কার করা হয়েছে। এছাড়া ছয় শিক্ষার্থীকে দেয়া হ‌য়ে‌ছে  বিভিন্ন মেয়াদে সাজা।

বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে বুয়েট বোর্ড অব রেসিডেন্স অ্যান্ড ডিসিপ্লিনের সদস্য সচিব ও ছাত্রকল্যাণ পরিদপ্তরের পরিচালক অধ্যাপক মিজানুর রহমান খান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আবরার হত্যাকাণ্ডে গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে বুয়েট বোর্ড অব রেসিডেন্স অ্যান্ড ডিসিপ্লিন এই সিদ্ধান্ত নেয়।

ব‌হিষ্কৃত ২৬ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ২৫ জনই পুলিশের অভিযোগপত্র অনুযায়ী অভিযুক্ত। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা ভঙ্গের কারণে আরও ছয়জনকে বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তি দেয়া হয়।

আজীবন বহিষ্কার হওয়া শিক্ষার্থীরা হলেন, অমিত সাহা, মেহেদী হাসান রবিন, মুহতাসিম ফুয়াদ, অনিক সরকার, মেহেদী হাসান রাসেল, ইফতি মোশররফ সকাল, মনিরুজ্জামান মনির, মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন, মাজেদুর রহমান, মো. মুজাহিদুর রহমান, এহতেশামুল রাব্বী, খন্দকার তাবাক্কারুল ইসলাম, হোসেন মোহাম্মদ তোহা, মো. আকাশ, শামীম বিল্লাহ, নাজমুস সাদাত, অমর্ত্য ইসলাম, মো. মোর্শেদ মন্ডল, মোয়াজ আবু হুরায়রা, মুনতাসির আল জেমি, মিজানুর রহমান, মুজতবা রাফিদ, আশিকুল ইসলাম, শামসুল আরেফিন রাফাত, ইশতিয়াক আহমেদ মুন্না ও এস এম মাহমুদ।

আর বিভিন্ন মেয়াদে সাজা হওয়া ছয় শিক্ষার্থী হলেন, নওশাদ সাকিব, সাইফুল ইসলাম, মো. গালিব, শাওন মিয়া, ইকবাল অভি ও মো. ইসমাইল।

তাৎক্ষ‌ণিক প্র‌তি‌ক্রিয়ায় আ‌ন্দোলনকারী বু‌য়ে‌টের এক শিক্ষার্থী ঢাকা টাইমসকে বলেন , ব‌হিষ্কা‌রের বিষয়‌টি আমরা শু‌নেছি। সবার সা‌থে আ‌লোচনা ক‌রে আমরা পরবর্তী পদ‌ক্ষেপ জানা‌বো।

এর আগে গত ১৩ নভেম্বর আবরার হত্যার ঘটনায় ২৫ জনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র  জমা দেয় গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এরই পরিপ্রে‌ক্ষি‌তে প‌রের দিন সংবাদ স‌ম্মেলন ক‌রে  ক্লাসে ফেরার জন্য বুয়েট কর্তৃপক্ষকে তিনটি শর্ত দেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা  এবং তিন‌টি শর্ত পূরণ হ‌লেই কেবল পরীক্ষায় বস‌বেন ব‌লে জানান। ওই শর্তের একটি ছিল অভিযোগপত্রভুক্ত আসামিদের স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা। এছাড়া বি‌ভিন্ন হ‌লে আ‌গের  র‌্যাগের ঘটনায় অভিযুক্তদের অপরাধের মাত্রা অনুযায়ী শাস্তি দেওয়ার দাবিও ছিল তাদের। তৃতীয় দফা ছিল সাংগঠনিক ছাত্ররাজনীতি ও র‌্যাগের জন্য সুস্পষ্টভাবে বিভিন্ন ধাপে ভাগ করে শাস্তির নীতিমালা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্ডিন্যান্সে অন্তর্ভুক্ত করা।

গত ৬ অক্টোবর গভীর রাতে বুয়েটের শেরে বাংলা হলের একটি কক্ষে শিবির সন্দেহে নৃশংসভাবে আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যা করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। দেশ-বিদেশে আলোড়ন সৃষ্টি করা এই ঘটনায় প্রায় দেড় মাস ধরে বুয়েটে অবলাবস্থা চলছে।

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.