আদালত স্বাধীন হলে ছাত্রলীগ কমিটি বিলুপ্ত হতো: রিজভী

নিজস্ব প্রতিবেদক

ছাত্রদলের নতুন কমিটির কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করায় আদালতের সমালোচনা করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। আদালত স্বাধীন নয় দাবি করে তিনি বলেন, স্বাধীন হলে আদালত ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটি বিলুপ্ত করত এবং আওয়ামী লীগকে শোকজ করত। 

মঙ্গলবার নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে রিজভী এসব কথা বলেন।

ছাত্রদলের নতুন কমিটির কার্যক্রমে আদালতের নিষেধাজ্ঞা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ছাত্রদল নিজেরা এখন পর্যন্ত যা কিছু করেছে, তার সবই আইনসম্মত। ছাত্রদল একটি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে নেতৃত্ব নির্ধারণ করেছে। কাউন্সিলরদের সরাসরি ভোটে নির্বাচিত এই কমিটি। এটা রাতের আঁধারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে দিয়ে নব্য বাকশালীদের ভোট ডাকাতি করে সরকার গঠনের মতো অবৈধ কিছু নয়।’

রিজভী বলেন, ‘আইনের বিধানে রাজনৈতিক দল বা তাদের কর্মকাণ্ড সংশ্লিষ্ট কোনো বিষয় আদালতের এখতিয়ারে পড়ে না, এমন একাধিক উচ্চ আদালতে রায় রয়েছে। আরপিও ১৯৭২ এবং দ্য পলিটিক্যাল পার্টিস অডিন্যান্স-১৯৭৮ অনুসারে বিএনপি একটি রাজনৈতিক দল। এই দল বা তার কোনো কর্মকর্তা বা কর্মকাণ্ডের ওপর সহকারী জজ আদালত বা নিম্ন আদালতের কোনো আদেশ জারি বা নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার এখতিয়ার নাই।’

রিজভী আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগ এতই বিএনপিকে ভয় পায় যে, একটা ছাত্রদলের কমিটি নিয়েও তাদের গায়ে জ্বালা ধরে গেছে। কে কমিটি করবে, কীভাবে কমিটি হলো- এটা আদালতের বিষয় নয়। আদালতকে দিয়ে রাজনীতি নিয়ন্ত্রণের এই সংস্কৃতি দেশের জন্য ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনবে।’

আদালতের নিষেধাজ্ঞা সম্পর্কে জানতে চাইলে রিজভী বলেন, ‘আমাদের কাছে এখনো কোনো কাগজ এসে পৌঁছায়নি। এ ব্যাপারে এখন কিছু বলতে পারব না। এখনো অফিসিয়ালি কিছু পাইনি।’

‘ছাত্রলীগের কমিটি গঠন, সভাপতি-সাধারণ সম্পাদককে বাদ দেওয়া, নতুন দুজনকে ভারপ্রাপ্ত হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের পরিপন্থী ও অবৈধ। অথচ এ ব্যাপারে আদালত নিশ্চুপ। আদালত একেবারে ডার্ক গ্লাস পড়ে বসে আছেন। আদালত যদি নিরপেক্ষ ও স্বাধীন হতো তাহলে আরপিও ভঙ্গ ও দস্যুবৃত্তিক কর্মকাণ্ড আমলে নিয়ে ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি বিলুপ্ত করে দিত। আওয়ামী লীগের হাইকমান্ডকে শোকজ করত।’

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে সরকারি দল ও অঙ্গ সংগঠনের নিচের সারির নেতাদেরও কোটি কোটি টাকার এফডিআর পাওয়া যাচ্ছে বলে দাবি করেন রিজভী।

বিশ্বখ্যাত সাময়িকী ফোর্বসের এক প্রতিবেদনের কথা উল্লেখ করে রিজভী বলেন, এতে বলা হয়েছে সিঙ্গাপুরের শীর্ষ ৫০ ধনীর তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে বাংলাদেশের সামিট গ্রুপ। চতুর্থ ও পঞ্চম গ্রেডের নেতা, তাদের দেখছি দু’শ কোটির টাকার মতো এফডিআর এবং অন্যান্য টাকা পয়সা। ওদের যদি দু’শ কোটি টাকার এফডিআর থাকতে পারে তাহলে এই সমস্ত (সামিট গ্রুপ) ব্যক্তিবর্গের টাকার পরিমাণটা কী রকমের, কী পরিমাণ সরকারি স্থাপনাতে কাজ করে টাকা নিয়ে গেছেন এবং সেটাকে বাইরে বিনিয়োগ করেছেন যে, সিঙ্গাপুরে ৫০ জন ধনীর মধ্যে এদের নাম আছে।’

সংবাদ সম্মেলনে দলের যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, হাবিব উন নবী খান সোহেল, কেন্দ্রীয় নেতা হাবিবুল ইসলাম হাবিব, আবদুস সালাম আজাদ, মফিকুল হাসান তৃপ্তি, খন্দকার আবু আশফাক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.