‘রোহিঙ্গা কেউ ভোটার হয়নি, হতেও পারবে না’

নিজস্ব প্রতিবেদক

রোহিঙ্গা কেউ ভোটার হয়নি এবং ভবিষ্যতেও হতে পারবে না বলে জানিয়েছেন  নির্বাচন কমিশনের (ইসি) জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম। বলেছেন, ‘বাংলাদেশে আসা ১১ লাখ ২০ হাজার রোহিঙ্গার আঙ্গুলের ছাপ ও তথ্য নিয়ে আলাদা রোহিঙ্গা সার্ভার প্রস্তুত করা হয়েছে। রোহিঙ্গা ডাটাবেজের সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের নিজস্ব ডাটাবেজ পরীক্ষা করার পর চূড়ান্ত করা হয়। এখন কোনো রোহিঙ্গা চাইলেই ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হতে পারবে না।’ 

সোমবার বিকালে আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

সাইদুল ইসলাম বলেন, ‘রোহিঙ্গা অধ্যুষিত বিশেষ এলাকার নাগরিকদের তথ্য যাচাইয়ের জন্য বিশেষ ফরম করা হয়েছে। সেই এলাকার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নেতৃত্বে ১৫ সদস্যের টিম করা হয়েছে।’

‘বর্তমানে ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রম ২০১৯ এর খসড়া তালিকা আগামী বছর ২ জানুয়ারি প্রকাশ হবে। চূড়ান্ত ভোটার তালিকা ২০২০ সালে ৩১ জানুয়ারি প্রকাশ করা হবে।’

নির্বাচন কমিশন কর্মকর্তা বলেন, ‘ভোটার তালিকা হালনাগাদের সময় বিশেষ কার্যক্রম শেষ করে সার্ভারে তথ্য আপলোড করা হয়। এরপর ফিঙ্গার প্রিন্ট ম্যাচিং করে যারা ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হওয়ার যোগ্য, কেবল তাদেরই অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ১১ লাখ ২০ হাজার রোহিঙ্গাদের বায়োমেট্রিক আমাদের কাছে আসে। আমার রোহিঙ্গা সার্ভার প্রস্তুত করেছি। এখন যাদের তথ্য নেওয়া হচ্ছে, তাদের আঙ্গুলের ছাপ ও তথ্য প্রথমেই রোহিঙ্গা সার্ভারে ম্যাচ করে দেখা হচ্ছে। কারো তথ্য এই সার্ভারে ম্যাচ করলে মূল সার্ভারে আর যাওয়াই হবে না। এছাড়া খসড়া প্রকাশের পূর্বে আমরা ম্যচিং করবো। কাজেই তারা ভোটার হতে পারবে না।’

সাইদুল ইসলাম বলেন, ‘চট্টগ্রামের ৩২টি এলাকাকে আমরা বিশেষ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করেছি। বিশেষ এলাকার জন্য বিশেষ ফরম পূরণ করা হয় এবং সার্ভারে তথ্য অন্তর্ভুক্তির জন্য বিশেষ কমিটির সুপারিশের প্রয়োজন পড়ে। উপজেলায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং জেলায় জেলা প্রশাসককে আহ্বায়ক করে এসব বিশেষ কমিটি গঠন করা হয়েছে।’

‘প্রাথমিক তদন্তে এই অপচেষ্টার সঙ্গে আমরা কক্সবাজারে দুজন দালালের সম্পৃক্ততা পাই। তাদের পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। এছাড়া আমাদের একজন পিয়ন এর সঙ্গে জড়িত আছে।’

রোহিঙ্গাদের ব্যাপারে নির্বাচন কমিশন সতর্ক এ কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘কোনো বিদেশি বা রোহিঙ্গা যাতে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হতে না পারে, এজন্য আমরা বদ্ধপরিকর। এজন্য সিকিউরিটি ফিচার পরিবর্তন করেও যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বিশেষ কমিটিও যাতে সুচারুভাবে কাজ করে সেই ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে।’

৪৬ জনের ভুয়া ভোটার হওয়ার বিষয়ে সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এটা অপচেষ্টা। এখনো ভোটার হতে পারেনি। চেষ্টা তো করছে। কিন্তু সফল হতে পারবে না। ৪৬ জনের কেউ এনআইডি পায়নি। দক্ষতার সঙ্গে কাজটি সম্পন্ন করা হচ্ছে। অপচেষ্টায় কেউই সফল হতে পারবে না।’

সংবাদ সম্মেলনে এসময় ইসির অতিরিক্ত সচিব মো মোখলেছুর রহমান, এনআইডি অনুবিভাগের পরিচালক (অপারেশন্স) আবদুল বাতেনসহ কর্মকর্তা অন্যরা  উপস্থিত ছিলেন।

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.