ঘুষের টাকাসহ নৌ অধিদপ্তরের সার্ভেয়ার সাইফুর আটক

নিজস্ব প্রতিবেদক

ঘুষের টাকা নেওয়ার সময় হাতেনাতে আটক হয়েছেন নৌ পরিবহন অধিদপ্তরের শিপ সার্ভেয়ার মির্জা সাইফুর রহমান। সোমবার বেলা সাড়ে এগারোটার দিকে তার কার্যালয় থেকে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) একটি দল তাকে আটক করে।

দুদক সূত্র জানায়, নগদ দুই লাখ টাকা ঘুষ নেওয়ার সময় দুদকের একটি ভ্রাম্যমাণ দল তাকে আটক করে। দলের নেতৃত্বে ছিলেন দুদকের সহকারী পরিচালক আবদুল ওয়াদুদ।

সূত্র আরও জানায়, সুনির্দিষ্ট অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে মির্জা সাইফুর রহমানকে আটক করতে দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয় থেকে বিশেষ দল গঠন করা হয়।

অভিযোগকারীর কাছ থেকে জাহাজের সার্ভেসংক্রান্ত কাজ করে দেওয়ার জন্য ঘুষ হিসেবে দুই লাখ টাকা চেয়েছিলেন ওই সার্ভেয়ার। পরে তাকে টাকাসহ আটক করা হয়। তার বিরুদ্ধে মামলা করার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন আছে।

এর আগে নানা অভিযোগে মির্জা সাইফুরের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে দুদক। সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে জানা যায়, অভ্যন্তরীণ নৌ-যান সার্ভে এবং রেজিস্ট্রেশনে ভয়াবহ দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। নকশা ছাড়াই ভুয়া ও জাল কাগজপত্রের মাধ্যমে নৌযান রেজিস্ট্রেশন করে সরকারের কোটি কোটি টাকা রাজস্ব ফাঁকি দেওয়া হয়েছে। এমনকি চার দশকের পুরনো জাহাজ নতুন দেখিয়ে রেজিস্ট্রেশন প্রদান করেছে। পরে দুদকের তদন্তে এসব বেরিয়ে আসে। এসব তদন্ত প্রতিবেদন ধামাচাপা দেওয়া চেষ্টার অভিযোগও আছে তার বিরুদ্ধে।

প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালে ৪ আগস্ট মুন্সিগঞ্জের মাওয়া ঘাটের কাছে পদ্মায় পিনাক-৬ নামের যাত্রীবাহী লঞ্চ ডুবে শতাধিক যাত্রীর সলিল সমাধি ঘটে। অভিযোগ আছে, নৌ-যানটিতে অনেক ত্রুটি থাকা সত্ত্বেও মির্জা সাইফুর মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে অবৈধভাবে এটিকে দফায় দফায় যাত্রী পরিবহনের অনুমতি দিয়েছিলেন।

তার আগে ওই বছরের মে মাসে মুন্সিগঞ্জে এম ভি মিরাজ-৪ নামে একটি লঞ্চ ডুবে ৫৬ জনের প্রাণহানি ঘটে। যান্ত্রিক ত্রুটিপূর্ণ ওই নৌ-যানটিরও সার্ভের দায়িত্বে ছিলেন মির্জা সাইফুর। এসব অভিযোগে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। উচ্চ পর্যায়ে দেনদরবারের মাধ্যমে বরখাস্ত আদেশটি এক পর্যায়ে প্রত্যাহার করা হলে পরে ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে উচ্চ আদালতের নির্দেশে প্রত্যাহার আদেশটি স্থগিত করা হয়।

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.