কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীর ক্লিনিকে ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যু

0

সাইফুর রহমান শামীম, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি : কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীতে একটি ক্লিনিকে ভুল চিকিৎসায় এক রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে। মৃত্যু বরণ করা রোগীর নাম জমিলা খাতুন (২৮)। সে ভূরুঙ্গামারী সদর ইউনিয়নের আঙ্গারীয়া গ্রামের রিপনের স্ত্রী।

জমিলা খাতুনের মরদেহ দাফন শেষে তাঁর স্বজনরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ক্ষুব্দ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে পোস্ট দিলে বিষয়টি জানাজানি হয়। স্বজনদের দাবী ভুল ভাবে দু’বার জরায়ুতে অপারেশন করায় ইনফেকশন এবং ব্যাপক রক্ত ক্ষরণ হওয়া রোগীর মৃত্যু হয়েছে।

জমিলার বাবা আঃ জলিল জানান, গত ৪ জুলাই বৃহস্পতিবার জরায়ুতে সমস্যার চিকিৎসা নিতে জমিলা খাতুনকে ভূরুঙ্গামারী মাদার ক্লিনিক এন্ড নার্সিং হোমে ভর্তি করা হয়। পরদিন শনিবার ক্লিনিকের প্রসূতি ও স্ত্রী রোগ বিশেষজ্ঞ ডাক্তার মাহবুবা খাতুন কনা জমিলার অপারেশন করেন। সেদিন রোগীকে পাঁচ ব্যাগ রক্ত দেয়া হয়। রোববার দ্বিতীয় দফায় অপারেশন করা হয় এবং এদিন দুই ব্যাগ রক্ত দেয়া হয়। অবস্থার অবনতি দেখে সোমবার রোগীর স্বজনরা উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে বিভাগীয় শহর রংপুর নিতে চাইলে ক্লিনিকের কর্মরত ব্যক্তিবর্গ বাঁধা প্রদান করেন এবং উন্নত চিকিৎসার আশ^াস দান করেন। বুধবার জমিলার অবস্থার আরও অবনতি হলে তাঁর বাবা ও ভগ্নীপতি তাঁকে রংপুর প্রাইম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করান। রোগীর অবস্থার অবনতি দেখে সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক জমিলাকে আই.সি.ইউতে স্থানান্তর করেন। বৃহস্পতিবার ১১ জুলাই চিকিৎসারত অবস্থায় সন্ধ্যা ৬টার দিকে জমিলা খাতুন মারা যায়। জমিলার এক পুত্র সন্তান ও দুই কন্যা সন্তান রয়েছে। ছোট কন্যা শিশুটির বয়স দেড় বছর। ফেসবুক পোস্টে জমিলার স্বজনরা প্রশাসনের নিকট অভিযুক্ত ডাক্তারকে আইনের আওতায় এনে ক্লিনিকের কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়ার দাবী জানান।

অভিযোগ সম্পর্কে কথা বলতে চিকিৎসক মাহবুবা খাতুন কনার মুঠো ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করে তাকে পাওয়া যায়নি।

মাদার ক্লিনিক এন্ড নার্সিং হোমের স্বত্ত্বাধিকারী আনোয়ার হোসেন স্বপন জানান, ‘ডাক্তার কনা প্রায় ১৪ বছর যাবত ভূরুঙ্গামারীতে চিকিৎসা সেবা দিয়ে আসছেন। অপারেশনের পর জমিলা খাতুন সুস্থ ছিলেন। প্রত্যেক চিকিৎসক রোগীকে সুস্থ করার সর্বোচ্চ চেষ্টা করেন, জমিলার বেলায়ও এর ব্যতিক্রম হয়নি।’

ভূরুঙ্গামারী সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান একেএম মাহমুদুর রহমান রোজেন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ আবু সাজ্জাদ মোঃ সায়েম জানান, তিনি কোনো অভিযোগ পাননি, অভিযোগ পেলে তদন্ত পূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের বিধান রয়েছে।

Leave A Reply