শীত মানেই পিঠা খাওয়ার দিন

 

সামসুজ্জামান সুমন,কিশোরগঞ্জ (নীলফামারী) ঃ শীত মানেই বাহারী সব পিঠা পুলির দিন। শীতের পিঠাপুলি বাঙালির আদি খাদ্য সংস্কৃতির একটি অংশ। তাই শীত এলেই তা যেনো রূপ নেয় রঙিন আকারে। আর পিঠার মৌ-মৌ ঘ্রাণ ভরিয়ে যায় চার দিক। এমন ভাবনাই তো বাঙালির মানসপটে ভেসে উঠবে। তাই পৌষের কুয়াশা মোড়ানো শীতের হিমেল হাওয়ায় ধোঁয়া উঠা ভাপা পিঠা, চিতই পিঠা, তেলে ভাজা পিঠার স্বাদ না নিলে তৃপ্তি মেটে না অনেকের। তাই পিঠা প্রেমিকদের শীতের পিঠার স্বাদ নেওয়ার ধুম পড়েছে নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলায়।

 

 

এবারো শীতের প্রকোপ বেশী হওয়ায় শহরের অলিতে গলিতে, বিভিন্ন রাস্তার মোড়ে ও পাড়া মহল্লায় বসেছে ভ্রাম্যমান পিঠার দোকান। এসব দোকানে নানা শ্রেণি পেশার পিঠামোদি মানুষের হুমড়ি পড়া ভিড়। এ পিঠায় মায়ের আদর মাখা না থাকলেও আছে শহরে ব্যবসায়ীদের যতœ।

 

 

সরেজমিনে দেখা গেছে, পিঠা বিক্রেতাদের মধ্যে অধিকাংশ হত দরিদ্র পরিবারের নারী। সংসারে আর্থিক স্বচ্ছলতা ফেরাতে ফুটপাতে পিঠা তৈরি করছে তারা। আবার সংসারে অর্থ উপার্জনের কেউ না থাকায় পিঠা তৈরি করে সংসার চালাচ্ছেন অনেকেই। এ সময় কিশোরগঞ্জ মাগুড়া বাসষ্ট্যান্ড পিঠা বিক্রেতা নারী জাকিয়া বেগম (৩৫) জানান, সংসারে আয় রোজগার করার মতো একমাত্র স্বামী তাও আবার কিছুদিন আগে একটি পা কেটে ফেলা হয়েছে এখন আমি একমাত্র পরিবারের ভরসা ।

 

সারা বছরই রাস্তার পাশে পিঠা বিক্রি করে সংসার চালাতে হয়। প্রতিদিন জ্বালানি খরচ বাদে আয় হয় ১৫০শ থেকে ২শত টাকা। যা দিয়ে সংসার কোন রকম চলে। এরকম দৃশ্য চোখে পড়ে ঝর্নার মোড়,গাড়াগ্রাম রাহেলার স্ট্যান্ড, মাগুড়া চেকপোষ্ট, বড়ভিটা বাজারসহ বিভিন্ন জায়গায় ভ্রাম্যমান পিঠার দোকান দেখা যায়। এদের মধ্যে বেশির ভাগই শীতকাল আসলে পিঠার দোকান নিয়ে রাস্তার পাশে তাদের দেখা যায়। পুরো শীত পর্যন্ত চলে এ ব্যবসা। মাগুড়া বাসস্ট্যান্ডর মোড়ের মনো বেগম ও মমতাজ জানান, শীতের শুরু থেকে পিঠার দোকানে ভিড় জমে।

 

বেচা-বিক্রি ও খুব ভালো। অনেক সময় ক্রেতার চাহিদা মিটানো যায় না। আর চিতই পিঠা ৫ থেকে ১০টাকা এবং ভাপা পিঠা বিক্রি হয় ১০টাকা। ভাপা পিঠা মুখরোচক করতে ঝুড়া খেজুরের গুড়, নারিকেল দিয়ে বানানো হয়। চিতই পিঠা স্বাদ বাড়াতে সরষে বাটা, ধনে পাতার ভর্তা, শুঁটকি ভর্তা, মরিচের ঝাল দোকানে রাখা হয়। শীত কালীন এই পিঠা বিক্রি করে সংসারের ভালো আয় রোজগার হচ্ছে।

 

পিঠা মোদি মাগুড়া মিয়া পাড়া গ্রামের শামীম রেজা, জানান সংসারিক ব্যস্ততার কারনে বাড়িতে পিঠা খাওয়ার সুযোগ হয়না। এ কারনে রাস্তা মোড়ের পিঠা যেমন লোভনীয় তেমনি মজাদার।

 

মাগুড়া আদর্শপাড়া গ্রামের বাহাদুর রহমান বলেন শীত কাল এলে মৌসুমী পিঠা ব্যবসায়ীদের নানা রকমে পিঠা বিক্রির ধুম পড়ে যায়। হাট বাজারে সকাল সন্ধ্যা পিঠা খেতে ভিড় করেন দোকান গুলোতে। এ ব্যবসার সাথে জড়িতরা স্বল্প পুঁজি দিয়ে ভালো আয় রোজগার করে পরিবারদের নিয়ে স্বাচ্ছন্দ জীবন যাপন করে।

 

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.