অমুসলিমদের নাগরিকত্ব দেবে মোদি সরকার

 

নিউজ ডেস্ক:

ভারতের বিতর্কিত নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় পাস হয়েছে। বুধবার পাস হওয়া বিলটি কার্যকর হলে বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে ভারতে অবৈধভাবে থেকে যাওয়া অমুসলিমদের নাগরিকত্ব দেবে দেশটির সরকার। তবে মুসলমানদের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে কী না সে সম্পর্কে কিছুই বলা হয়নি বিলটিতে।

আগামী সপ্তাহে লোকসভায় বিলটি উত্থাপন করা হবে। এসব দেশের হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, জৈন, ফার্সি এবং খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের নাগরিকত্ব দিতে এই আইনটি সংশোধন করতে চায় মোদি সরকার। লোকসভায় পাস করতে বিজেপির সব এমপিকে আগামী অধিবেশনে উপস্থিত থাকার অনুরোধ জানিয়েছেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং।

এই বিলে বলা হয়েছে, পাকিস্তান, বাংলাদেশ ও আফগানিস্তান থেকে যেসব অমুসলিম নাগরিক ধর্মীয় পীড়নের কারণে এ দেশে শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছেন, তাঁদের নাগরিকত্ব দেবে সরকার। বিলে প্রতিবেশী দেশ থেকে আসা মুসলমানদের বিষয়ে কী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে, তা উল্লেখ করা হয়নি। ধর্মের ভিত্তিতে কেন ওই ভেদাভেদ, তা নিয়ে ইতোমধ্যে আপত্তি জানিয়েছে বেশির ভাগ বিরোধী দল।

এর আগে, নাগরিকত্ব বিলটি লোকসভায় পাস হয়। সেসময় লোকসভা ভেঙে যাওয়ায়, রাজ্যসভায় উত্থাপনের আগেই বিলটি রদ হয়ে যায়।

ভারত সরকার বলছে, ধর্মীয় পরিচয়ের কারণে যাঁরা নিজ দেশে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন এবং ভারত ছাড়া যাঁদের কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই, তাঁদের সাহায্য করাই নতুন এই নাগরিকত্ব বিলের লক্ষ্য।

ধর্মকে ভারতের নাগরিকত্ব পাওয়ার মাপকাঠি হিসেবে নির্ধারণ করায় এই বিল ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছে। অনেকে বলছেন, এটা ভারতের ধর্মনিরপেক্ষ চরিত্রের ওপর একটি বড় আঘাত। ধর্মের কারণে নির্যাতনের শিকার হলে সবাইকে আশ্রয় দেওয়া উচিত ভারতের।

কেউ কেউ বলেছেন, বিলটিতে শ্রীলঙ্কা, নেপাল ও মিয়ানমার থেকে আসা হাজার হাজার অভিবাসীর সুরক্ষার বিষয়টিকে বাদ দেওয়া হয়েছে। এতে বোঝা যাচ্ছে, মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোতে বসবাস করে না, এমন সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের বিষয়ে ভারত সরকারের খুব একটা মাথাব্যথা নেই।

প্রকৃতপক্ষে, যখন মিয়ানমারের সংখ্যালঘু মুসলমান রোহিঙ্গারা তাদের দেশে ধর্মীয় ও জাতিগত পরিচয়ের জন্য নির্যাতিত হওয়ার পর ভারতে আশ্রয় চেয়েছিল, তখন ভারত সরকার তাদের জন্য কোনো আইনি সুরক্ষা দেওয়ার চেষ্টা করেনি। উল্টো তারা রোহিঙ্গাদের ভারতের জন্য হুমকি মনে করে তাদের দেশ থেকে জোর করে তাড়ানোর চেষ্টা করেছে।

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.