- সিউর সাকসেস স্কুল এন্ড ক্যাডেট কোচিং এর অভিভাবক সমাবেশ অনুষ্ঠিত - October 19, 2024
- A large public meeting was held at Dhanbari on the initiative of BNPMd. - October 19, 2024
- BNP initiative in Dhanbari to pray for the souls of those martyred in the mass uprising - October 19, 2024
নিউজ ডেস্ক:
মহান আল্লাহ পৃথিবীর সব প্রাণীকেই কোনো না কোনো বিশেষ কারণে সৃষ্টি করেছেন। তাদের প্রত্যেককেই ভাগ করে দিয়েছেন আলাদা আলাদা। কিছু প্রাণী এমন আছে, যেগুলো প্রকৃতির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাদের হত্যা করতে নিষেধ করেছেন রাসুল (সা.)। ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী (সা.) চার প্রকার প্রাণী হত্যা করতে বারণ করেছেন, পিঁপড়া, মধুমক্ষিকা, হুদহুদ পাখি এবং চড়ুইসদৃশ বাজপাখি। (আবু দাউদ, হাদিস : ৫২৬৭)
পিঁপড়া : পিঁপড়া কেন মারা যাবে না—এর কারণ হলো, পিঁপড়ারাও আল্লাহর তাসবিহ পড়ে। তারাও আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করে। রাসুল (সা.) বলেছেন, তোমাদের সাধারণ ব্যক্তির ওপর আমার যতখানি মর্যাদা, ঠিক তেমনি একজন আলেমের মর্যাদা একজন আবিদের (ইবাদতকারী) ওপর। তারপর রাসুল (সা.) বললেন, নিশ্চয়ই আল্লাহ, তাঁর ফেরেশতারা এবং আসমান-জমিনের অধিবাসীরা, এমনকি গর্তের পিঁপড়া এবং পানির মাছ পর্যন্ত সেই ব্যক্তির জন্য দোয়া করে যে মানুষকে কল্যাণকর জ্ঞান শিক্ষা দেয়। (তিরমিজি, হাদিস : ২৬৮৫)
তাই অহেতুক পিঁপড়াদের হত্যা করা উচিত নয়। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, কোনো এক নবীকে একটি পিঁপড়া দংশন করলে তিনি সে পিঁপড়ার বস্তি জ্বালিয়ে দেওয়ার আদেশ দেন এবং তা জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। তখন আল্লাহ তাআলা তাঁর প্রতি ওহি প্রেরণ করে বলেন, তোমাকে তো একটা পিঁপড়া দংশন করেছে। আর তুমি এমন এক জাতিকে ধ্বংস করলে যারা আল্লাহর মহিমা ও পবিত্রতা ঘোষণা করত। (নাসায়ি, হাদিস : ৪৩৫৮)। তবে কোনো পিঁপড়া যদি ক্ষতি করে, তবে তাকে তাড়ানোর ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে।
রাসুল (সা.) সুন্নাত মোতাবেক খাবারদাবার ঠিকমতো ঢেকে রাখলে পিঁপড়ার আক্রমণ করার আশঙ্কা কম। রান্নাঘরের কেবিনেটে পিঁপড়ার আক্রমণ হলে সেখানে দারচিনি গুঁড়া কিংবা শুকনা মরিচ রেখে দেওয়া যেতে পারে। তাহলে সেখানে পিঁপড়ারা আক্রমণ করবে না ইনশাআল্লাহ।
মৌমাছি : মৌমাছি মহান আল্লাহর অপূর্ব সৃষ্টি। যাকে আরবিতে বলা হয় ‘নাহল’। পবিত্র কোরআনে ‘নাহল’ নামে একটি সুরাই অবতীর্ণ হয়েছে।
মৌমাছি আমাদের জন্য উত্কৃষ্ট মধু আহরণ করে। প্রিয় নবী (সা.) মধু খেতে খুব ভালোবাসতেন। (শামায়েলে তিরমিজি, হাদিস: ১২১)। এরা খুবই পরিশ্রমী পতঙ্গ। ফুলের রস মুখে নিয়ে, সেটা থেকে জলীয় অংশ দূর করে শতভাগ ভেজালমুক্ত এক ফোঁটা মধু তৈরি করতে যে শ্রম ও সময় ব্যয় করে সেটা বিস্ময়কর! এক পাউন্ড মধু বানাতে ৫৫০ মৌমাছিকে প্রায় ২০ লাখ ফুলে ভ্রমণ করতে হয়! আবার এক পাউন্ড মধু সংগ্রহ করতে একটি কর্মী মৌমাছিকে প্রায় ১৪.৫ লাখ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করতে হয়! যা দিয়ে পৃথিবীকে তিনবার প্রদক্ষিণ করা সম্ভব!
সায়েন্স টাইমসের মতে, পৃথিবীতে যত রকমের চাষ মানুষ করে থাকে তার ৭০ শতাংশ নির্ভর করে মৌমাছির ওপর। যদি মৌমাছি ফুলে ফুলে উড়ে মধু আহরণ না করে, তাহলে তাদের গায়ে ফুলের পরাগরেণু লাগবে না। সেই রেণু অন্য ফুলের গায়ে না লাগলে হবে না পরাগায়ণ। খুব কম সময়ের মধ্যে পৃথিবীতে আমাদের চেনাজানা কোনো গাছের অস্তিত্ব আর থাকবে না। আলবার্ট আইনস্টাইন বলেছিলেন, ‘মৌমাছি যদি না থাকে, তাহলে মানুষ নিশ্চিহ্ন হতে সময় লাগবে চার বছর।’
হুদহুদ পাখি : আমাদের দেশের মানুষ এটিকে মোহনচূড়া বা কাঠকুড়ালি হিসেবে চেনে। যেহেতু হুদহুদ পাখির অনেক উপপ্রজাতি আছে, তাই আমাদের দেশের মোহনচূড়াই সুলাইমান (আ.)-এর হুদহুদ কি না তা নিয়ে সংশয় আছে। ইংরেজিতে একে হুপো বা হুপি বলে ডাকা হয়। আরবি ও উর্দুতে একে ডাকা হয় হুদহুদ নামে। মধ্যপ্রাচ্যের প্রতিটি দেশ, মিসর, মাদাগাস্কার, এমনকি ইউরোপের কোনো কোনো দেশেও এর দেখা পাওয়া যায়। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতেও মাঝেমধ্যে এই পাখির দেখা পাওয়া যায়। পাখিটির শরীর বাদামি এবং ডানা ও লেজে সাদা-কালো দাগ রয়েছে। মাথায় আছে রাজমুকুটের মতো সুন্দর একটি ঝুঁটি। সেই ঝুঁটির হলদে-বাদামি পালকের মাথাটা কালো রঙের। এরা ক্ষতিকর পোকামাকড় খেয়ে ফসলের জন্য উপকারী পাখি হিসেবে সমাদৃত। তাই অনেক দেশে আইন করে এদের সংরক্ষণ করার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ২০০৮ সালের মে মাসে পাখিটিকে দেশের জাতীয় পাখির স্বীকৃতি দিয়েছে ইসরায়েল। (ওয়াইনেট নিউজ)
চড়ুইসদৃশ বাজপাখি : অনেকের মতে এটি শ্রাইক পাখি। যাকে আমাদের দেশে কসাই পাখি বলা হয়। ছোট ও মাঝারি আকারের মাংসাশি পাখি। শিকারের অভিনব কৌশল এবং তা সংরক্ষণের প্রবণতার কারণে এদের কসাই পাখি বলা হয়। এরা ঠিক মাংসের দোকানের মতো শিকার কাঁটাজাতীয় জিনিসে গেঁথে রাখে। মাটিতে থাকা বা উড়ন্ত পোকামাকড়, কীটপতঙ্গ, ছোট গিরগিটি, টিকটিকি, নির্বিষ সাপের বাচ্চা, ইঁদুরছানা ইত্যাদি খেতে পছন্দ করে। এ ছাড়া তাদের খাবার তালিকায় রয়েছে তেলাপোকা ও ঝিঁঝিপোকা। যার প্রতিটি জিনিসই মানুষের ঘর ও ফসলের জন্য ক্ষতিকারক। বাংলাদেশে এদের কয়েকটি প্রজাতি রয়েছে, যাদের রং ও রূপ আলাদা।
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.