- সিউর সাকসেস স্কুল এন্ড ক্যাডেট কোচিং এর অভিভাবক সমাবেশ অনুষ্ঠিত - October 19, 2024
- A large public meeting was held at Dhanbari on the initiative of BNPMd. - October 19, 2024
- BNP initiative in Dhanbari to pray for the souls of those martyred in the mass uprising - October 19, 2024
নোয়াখালীর সুধারাম থানার বাসিন্দা মোহাম্মদ ইউছুপ ট্রলারে মাছ ধরার কাজ করেন। রবিবার (১৭ নভেম্বর) সকালে গ্রামের বাড়িতে যাওয়ার কথা ছিল তার। পরিকল্পনা অনুযায়ী রবিবার সকালে ছোট ভাই আরিফকে (১৫) নিয়ে পাথরঘাটার থেকে বাড়ির উদ্দেশে রওয়ানাও হয়েছিলেন। কিন্তু, পাথরঘাটার দুর্ঘটনায় শেষ পর্যন্ত ইউছুপ বাড়িতে যেতে পারেননি। এখন চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তিনি হাসপাতালের ক্যাজুয়াল্টি ওয়ার্ডের ৩ নম্বর বেডে চিকিৎসাধীন।
মোহাম্মদ ইউছুপ বাংলা ট্রিবিউনকে আরও বলেন, ‘যদি আমরা ওই ভবনের সামনে থাকতাম, তাহলে নিশ্চিতভাবে মারা যেতাম। বিস্ফোরণে দেয়ালের ইট উপড়ে আমার মাথায় আঘাত লেগেছে। হাতে-পায়েও জখম পেয়েছি। কিন্তু, আমার ভাইয়ের অবস্থা আশঙ্কাজনক। ও আমার থেকে একটু সামনে থাকায় বেশি আহত হয়েছে। তার পা ফেটে গেছে। মাথা ও কোমরে গুরুতর জখম হয়েছে। আরিফ হাসপাতালের ২৬ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন।’
একই অবস্থা তার বিপরীত পাশের বেডে চিকিৎসাধীন লেগুনাচালক আব্দুল হামিদের। বিস্ফোরণে উপড়ে আসা দেয়াল তার মাথায় আঘাত করেছে। তার স্ত্রী কামরুন নাহার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘প্রতিদিনের মতো আজও খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠে আমার স্বামী বাসা থেকে বের হয়ে যান। সকাল ৯টা পর্যন্ত লেগুনা চালানোর পর মেয়েদের স্কুলে নিয়ে যেতে বাসায় আসেন। পথে দুর্ঘটনার শিকার হন।’
কামরুন নাহার আরও বলেন, ‘হাসপাতালে আনার পর থেকে আবোল-তাবোল বকছেন। কোনোভাবে তাকে থামানো যাচ্ছে না। ডাক্তার দুই দফায় ঘুমের ইনজেকশন দিয়েছেন। তাতেও তার ঘুম আসছে না।’
রবিবার (১৭ নভেম্বর) সকাল ৯টায় পাথরঘাটার ব্রিক ফিল্ড রোডের বড়ুয়া ভবনে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে এক স্কুল শিক্ষিকাসহ সাত জন নিহত হন। আহত হয়েছেন আরও ১০ জন।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ওই ভবনের নিচতলার কাজল নাথের বাসা থেকে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। তবে দুর্ঘটনার সময় কাজল নাথ ও তার স্ত্রী মনি দে বাসায় ছিলেন না। তখন বাসায় তার ছেলে অর্নব, মেয়ে অর্পিতা ও স্ত্রীর বড় বোন সন্ধ্যা রাণী ছিলেন। তাদের মধ্যে অর্পিতা ও সন্ধ্যা রানী আহত হয়েছেন।
কাজল নাথ ১০ বছর ধরে এই বাসায় ভাড়া থাকছেন জানিয়ে তার প্রতিবেশী সবুজ শঙ্কর নাথ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘‘দুর্ঘটনার পর বাসা থেকে বের হয়ে দেখি বিস্ফোরণের ঘটনায় কাজল নাথের মেয়ে অর্পিতা ও তার পিসি সন্ধ্যা রাণী আহত হয়েছেন। আমাদের পাশের ‘সাঝের মায়া’ ভবনের বাসিন্দা স্কুলশিক্ষিকা অ্যানি বড়ুয়া নিহত হয়েছেন। আরও ৫-৬ জন নিহত হন। কিন্তু, আমরা তাদেরকে শনাক্ত করতে পারিনি। তাদের অনেকে পথচারী ছিলেন।’’
নিহত স্কুলশিক্ষিকা অ্যানি বড়ুয়া চট্টগ্রামের পটিয়ার মেহের আটি প্রাথমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা। রবিবার শুরু হওয়া প্রাইমারি স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষায় (পিইসি) দায়িত্ব পালন করার কথা ছিল। পরীক্ষার হলে যাওয়ার পথেই তিনি দুর্ঘটনার শিকার হন। তিনি ‘সাঝের মায়া’ ভবনের ষষ্ঠ তলায় পরিবার নিয়ে থাকতেন।
অ্যানি বড়ুয়ার পাশের ফ্ল্যাটের বাসিন্দা ফেরদৌস বেগম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘অ্যানীর স্বামী পিডিবির কর্মকর্তা। প্রতিদিন সকালে স্বামী আগে বের হয়ে যান। পরে তিনি বের হন। প্রতিদিন তিনি অন্য সড়ক দিয়ে স্কুলে যান। আজ তার কোনও সহকর্মী হয়তো কোতোয়ালির মোড়ে অপেক্ষা করছিলেন। তাই তিনি এই সড়ক দিয়ে সেদিকে যাচ্ছিলেন। যাওয়ার পথেই দুর্ঘটনার শিকার হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান।’
অ্যানি বড়ুয়ার ছোট ভাই অনিক বড়ুয়া বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষার কেন্দ্রে দিদির দায়িত্ব পালনের কথা ছিল। সকালে স্কুলে যেতেই তিনি বাসা থেকে বের হয়েছিলেন।’
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.