- সিউর সাকসেস স্কুল এন্ড ক্যাডেট কোচিং এর অভিভাবক সমাবেশ অনুষ্ঠিত - October 19, 2024
- A large public meeting was held at Dhanbari on the initiative of BNPMd. - October 19, 2024
- BNP initiative in Dhanbari to pray for the souls of those martyred in the mass uprising - October 19, 2024
অনলাইন ডেস্ক
পেঁয়াজের বাজার কোনভাবেই নিয়ন্ত্রণে রাখা যাচ্ছে না, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কোনো পদক্ষেপই কাজে আসেনি। নানা উদ্যোগ সত্ত্বেও পেঁয়াজের দাম কমাতে পারেনি সরকার। বাণিজ্যমন্ত্রী ও বাণিজ্যমন্ত্রণালয়ের সচিব পেঁয়াজের যথেষ্ট মজুত থাকার কথা বললেও বাস্তবে তার প্রমাণ মিলছে না। খোলাবাজারে বৃহস্পতিবার কেজি প্রতি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ২০০ থেকে ২২০ টাকায়।
গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই পেঁয়াজের বাজারে চরম অস্থিরতা চলছে। এরই ধারাবাহিকতায় এবার পেঁয়াজের দাম কেজি প্রতি ডাবল সেঞ্চুরিতে গিয়ে ঠেকেছে।
রাজধানীর কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, মিশর থেকে আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১৭০থেকে ১৮০ টাকা, মিয়ানমারের পেঁয়াজ ১৮০ থেকে ১৯০ আর দেশি পেঁয়াজের দাম ২০০ থেকে ২২০ টাকা।
পেঁয়াজের এই লাগামহীন দামে ক্ষোভ ক্রেতাদের মাঝে। পেঁয়াজের বাজার কারা নিয়ন্ত্রণ করছেন সে প্রশ্ন সাধারণ মানুষের। মিয়ানমার থেকে ৪২ টাকা দরে পেঁয়াজ কেনার পরেও দেশে কোন অজুহাতে এত দাম সে প্রশ্নও ক্রেতাদের। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্টদের এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান তাদের।
অনেকেই রসিকতা করে বলছেন, খেলার মাঠে না পারলেও পেঁয়াজে আমরা ডাবল সেঞ্চুরি করতে সক্ষম হয়েছি। বাংলাদেশের পেঁয়াজ এখন বিশ্ব রেকর্ড করেছে। কারণ, পৃথিবীর কোথাও ২০০ টাকা কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হয় এমন খবর এখন পর্যন্ত শুনিনি।
এদিকে, পেঁয়াজের দাম বাড়ার সাথে সাথে পেঁয়াজের বিক্রিও কমেছে। কারওয়ান বাজারের এক মুদি দোকানি বলেন, দাম বাড়ার কারণে পেঁয়াজ বিক্রিও কমে গেছে। আগে দিনে ২০ কেজির মতো বিক্রি হলেও এখন ৭ কেজি পেঁয়াজও বিক্রি হয় না।
যদিও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছিল, মিসর ও তুরস্ক থেকে দু-এক দিনের মধ্যে পেঁয়াজের বড় ধরনের চালান দেশে পৌঁছাবে। এতে পেঁয়াজের মূল্য উল্লেখযোগ্য হারে কমে আসবে।
পেঁয়াজের এই অস্বাভাবিক চড়া দামের মূল কারণ ভারত চলতি সেপ্টেম্বরের শুরুর দিকে বাংলাদেশের জন্য পেঁয়াজের রফতানি মূল্য তিনগুণ করে ভারত। এরপর সেপ্টেম্বরের শেষদিকে বাংলাদেশে পেঁয়াজ রফতানি বন্ধের ঘোষণা দেয় ভারত সরকার। ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বৈদেশিক বাণিজ্য বিভাগ এ সংক্রান্ত আদেশ জারি করে। ভারতের অভ্যন্তরীণ চাহিদায় প্রভাব না পড়ার জন্য এই আদেশ জারি করা হয়।
আদেশে বলা হয়, পরবর্তী ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশে ভারতের পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ থাকবে। তবে এ বিষয়ে তখন কিছুই জানতো না বাংলাদেশের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
সর্বশেষ পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ঘূর্ণিঝড় বুলবুলকে ঘিরে। গত শনিবার বুলবুল আঘাত হানার একদিন আগে থেকে নতুন করে বাড়তে থাকে দাম। তার আগে খুচরায় পেঁয়াজের দাম ১২০ থেকে ১৫০ টাকার মধ্যে ছিল। ঢাকায় পেঁয়াজের সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার শ্যামবাজারেও পিয়াজের সরবরাহে টান পড়েছে বলে সেখানকার ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন।
এদিকে মন্ত্রণালয় জানায়, আমদানিকারকদের উৎসাহিত করতে পেঁয়াজ আমদানির ক্ষেত্রে এলসি মার্জিন এবং সুদের হার হ্রাস করার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক পদক্ষেপ নিয়েছে। স্থল ও নৌ বন্দরগুলোতে আমদানিকৃত পেঁয়াজ দ্রুত ও অগ্রাধিকার ভিত্তিতে খালাসের জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ও বন্দর কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। সে মোতাবেক অগ্রাধিকার ভিত্তিতে আমদানিকৃত পেঁয়াজ খালাস করা হচ্ছে।
এছাড়া, মিয়ানমার থেকে বর্ডার ট্রেডের মাধ্যমে টেকনাফ বন্দর দিয়ে আমদানিকৃত পেঁয়াজ এবং দেশের বিভিন্ন জেলার পাইকারি হাটগুলোতে বিক্রিত পেঁয়াজ দ্রুত সারা দেশে নির্বিঘ্নে পৌঁছে যাচ্ছে।
পেঁয়াজের সরবরাহ ও দাম স্বাভাবিক রাখতে বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে উল্লেখ করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জানায়, ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে ট্রাক সেলে ঢাকা শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে ন্যায্যমূল্যে পেঁয়াজ বিক্রয় জোরদার করা হয়েছে। ৩৫টি ট্রাকের মাধ্যমে প্রতি কেজি ৪৫ টাকা মূল্যে পেঁয়াজ শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বিক্রয় হচ্ছে। ফলে স্বল্প আয়ের মানুষ ন্যায্যমূল্যে পেঁয়াজ ক্রয় করার সুযোগ পাচ্ছেন।
বাণিজ্য মন্ত্রণায় পেঁয়াজের দাম কমাতে বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা বললেও বাস্তবতা হলো, পেঁয়াজের দাম কমেনি । বরং দাম বেড়েছে। রান্নায় নিত্য ব্যবহার্য পেঁয়াজ চলে যাচ্ছে সাধারণ মানুষের ধরা-ছোঁয়ার বাইরে।
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.