ডোমারে সেভেন ষ্টার ক্লিনিকে প্রসুতির মৃত্যু

নীলফামারী প্রতিনিধিঃ
নীলফামারীর ডোমারে সেভেন ষ্টার ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনষ্টিক সেন্টারে সিজারের সময় প্রসুতি মেঘলা বেগমের (২৬) মৃত্য হয়েছে। তবে নবজাতক (শিশুটি) সুস্থ্য রয়েছে। মেঘলা উপজেলার ধর্মপাল ইউনিয়নের পাইটকাপাড়া গ্রামের রবিউল ইসলামের স্ত্রী।
ক্লিনিক কতৃপক্ষ, প্রসুতি মেঘলা বেগমের মরদেহ তড়িঘড়ি করে রংপুর মেডিকেল কলেজ
হাসপাতালে পাঠানোর চেষ্টা প্রতিহত করে রোগীর স্বজনেরা। এঘটনায়, নিহতের স্বামী রবিউল
ইসলাম ঘটনার রাতেই চারজনকে আসামী করে ডোমার থানায় মামলা দায়ের করেন। তিনি
অভিযোগ করে বলেন, এখনও আইনী পদক্ষেপ নেয়নি পুলিশ। এ মৃত্যুকে হত্যাকান্ড আখ্যায়িত করে আজ বুধবার (২৫ সেপ্টম্বর) সকালে খেরকাটি বাজারে
বিচারের দাবীতে মানববন্ধন করেছে নিহতের স্বজন ও এলাকাবাসী। পারিবারিক সুত্রে জানা যায়, মেঘলা বেগমকে প্রসব ব্যাথা নিয়ে গত ২০ সেপ্টেম্বর রাতে ভর্তি করায় ওই ক্লিনিকে। সিজারের জন্য ১৪ হাজার টাকা চুক্তি হলে নগদ ২ হাজার টাকা পরিশোধ করে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষকে।
রাতেই সিজারের সময় প্রসুতি মেঘলা বেগমের মৃত্যু হয়। ওই ঘটনাকে ধামাচাপা দিতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পরদিন তড়িঘড়ি করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। তবে রোগীর স্বজনরা তা প্রতিহত করে।
রবিউল ইসলাম বলেন, আমার স্ত্রীকে অপারেশন টেবিলে মেরে ফেলছে ওর্য়াড বয় রনজিৎ কুমার
আমি তার দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি চাই। নিহতের জা, মেহের বানু বলেন, সিজার ও সিজার পরবর্তী
সময়ে প্রসুতির উপর অকথ্য নির্যাতনে তার মৃত্যুর হয়। ওরা আমাকে জোর পুর্বক বলেন রুগিকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিতে হবে, আমি তখন বুঝতে পারি সে মারা গেছে। আমি রংপুরে যেতে না চাইলে তাদের সাথে কথা কাটাকাটি হয়।
নিহতের ভাসুর বলেন, ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের চাহিদা অনুযায়ী রক্ত দেয়ার পরেও তাদের অবহেলায়
অপারেশন টেবিলে রোগীর মৃত্যু হয়। মৃত্যুর সাথে জড়িতদের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবী করেন
তিনি।
এলাকাবাসী জানায়, একজন মৃত মানুষকে প্রতারনা করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে
পাঠানোর চেষ্টা ন্যাক্কারজনক, তাদের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি চাই। ডোমার থানার, উপ-পরিদর্শক রেজাউল করিম বলেন, চারজনের নামে ওই রাতেই মামলা দায়ের করা
হয়েছে, তদন্ত সাপেক্ষে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত কোন কিছুই বলা যাচ্ছে না।
ডোমার স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান কেন্দ্রের কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ ইব্রাহিম বলেন, ঘটনাটি
লোকমুখে শুনেছি। তবে এ ব্যাপারে সিভিল সার্জন মহোদয় সিন্ধান্ত নিতে পারবেন। আমার এখানে কিছুই করার নেই।
নীলফামারী সিভিল সার্জন, ডা. রনজিৎ কুমার বর্ম্মন বলেন, ডোমারের ওই ক্লিনিকে একজন
প্রসুতির মারা যাওয়ার বিষয়টি জানতে পেরেছি। এ ব্যাপারে ৩ সদস্যে তদন্ত কমিটি গঠন করা
হয়েছে। আগামী সাত দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়। ঘটনার সত্যতা পাওয়া
গেলে ক্লিনিকের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে।

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.