শারীরিক প্রতিবন্ধী ফুলতি বালা উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করতে চায়

সাইফুর রহমান শামীম, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি: কুড়িগ্রাম সদর ঘোগাদহ ইউনিয়নের সোবনদহ গ্রামের শারীরিক প্রতিবন্ধী ফুলতি বালা। সে এবার ঘোগাদহ মালেকা খাতুন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের মানবিক বিভাগের নবম শ্রেণীর ছাত্রী। জীবন মানে যুদ্ধ, এই কথাটা প্রমাণ করলেন শারীরিক প্রতিবন্ধী ফুলতি বালা। ফুলতি বালার শারীরিক উচ্চতা ২ ফুট ৪ ইঞ্চি । বর্তমান বয়স ১৪ বছর। প্রতিবন্ধীকতা আর দারিদ্র্যতার কষা ঘাতে জর্জরিত তার পরিবার। তিন শতক জায়গার উপর বাঁশের খুটির দিয়ে দাড়িয়ে আছে থাকার দুইটি ঘর। কষ্টসাধ্য জীবন নিয়ে বেঁচে আছে তার পরিবার।

গ্রামের বাড়ি থেকে স্কুলের দূরত্ব ৪ কিঃমিঃ পথ। যাতায়াতের এই পথ দু হাতের উপর ভর কবে বা কখনো বেটারি চালিত অটোরিকশায় করে। নেই ভালো একটি হুইলচেয়ার। বাবা মহেষ চন্দ্র এক জন দিন মজুরী, প্রতিদিন অটোরিকশার টাকাও দিতে পারেণ না। সে পড়ালেখার পাশাপাশি সেলাই মেশির (দর্জি) কাজ করে। তবে ভালো একটি সেলাই মেশিন না থাকায় তার কাজের কষ্ট সাধ্য হয়েছে। সেই পারিশ্রমিকের টাকা দিয়ে হাত খরচ চালাতে হয় ফুলতি বালাকে। শারীরিক প্রতিবন্ধী ফুলতি বালার অদম্য ইচ্ছা শক্তির কাছে হার মেনেছে দারিদ্রতা।

কুড়িগ্রামের শারীরিক প্রতিবন্ধী ফুলতি বালা জন্মের পর থেকেই কঠিন দারিদ্র্যতার সঙ্গে যুদ্ধ করে শিক্ষা গ্রহণ করে আসছে। লেখাপড়া করার প্রবল ইচ্ছে থাকায় তার মা পারুল বালা মানুষের বাড়িতে গিয়ে কাজ এবং দ্বারে দ্বারে সাহায্যে হাত বাড়িয়ে লেখাপড়ার খরচ জোগান দিয়ে আসছেন। প্রাইভেট পড়া ছাড়াই সে ২০১৮ সালের জেএসসি পরীক্ষায় ভালো পয়েন্ট পেয়ে নবম শ্রেণীর মানবিক বিভাগে পড়াশুনা করতেছে।

শারীরিক প্রতিবন্ধী ফুলতি বালা জানান, আজ যতটুকু শিক্ষার আলো সে পেয়েছে সমস্তটাই তার মা বাবার অবদান। প্রতিবন্ধীকতা আমাকে আটকাতে পাড়েনী। সরকারি বা বেসরকারি সাহায্য পেলে আমি ও আমার পরিবার উপকৃত হবো। আমার থাকার একটি ঘরের প্রোয়োজন। ফুলতি বালা সরকারি বা বেসরকারি সংস্থার গুলোকে প্রতি সাহায্যের আকর্ষণ করেছে।

ফুলতি বালা তার ভবিষ্যৎ সম্পর্কে জানান, উচ্চতর শিক্ষা গ্রহণের প্রবল ইচ্ছে রয়েছে তার। শিক্ষক হয়ে সমাজের অবহেলিত জনগোষ্ঠির হয়ে কাজ করতে চায় সে।

ঘোগাদহ মালেকা খাতুন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল মালেক জানায় , শিক্ষার প্রতি অধম্য অগ্রহ শারীরিক প্রতিবন্ধী ফুলতি বালাকে অনেক দূর নিয়ে যাবে। স্কুল থেকে বিনামুল্যে বই , স্কুলের মাসিক ফি ও পরীক্ষার ফি, মওকুব করা হয়েছে এবং পরীক্ষার ফরম ফিলাফের ক্ষেত্রেও বিবেচনা করা হয়।

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.