- কাজীপুর জবর দখলকৃত জমিতে রোপন করা ফসল নষ্ট করে উল্টো প্রকৃত জমির মালিককে ফাসানোর চেষ্টা - October 18, 2024
- ধনবাড়ীতে ইউনিয়ন বিএনপির উদ্যোগে এক বিশাল জনসভা - October 18, 2024
- ঢাঙ্গীপুকুর আদর্শ গ্রাম নূরানী মাদ্রাসার ভিত্তি প্রস্তরের শুভ উদ্বোধন - October 18, 2024
সেলিম রেজা, স্টাফ রিপোর্টার বগুড়া অফিস : দীর্ঘদিন ভেঙ্গে থাকা অরক্ষিত ব্রীজের ওপর দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে বগুড়ার শেরপুর উপজেলার বেড়ের বাড়ী গ্রাম বাসীকে। ভেঙ্গে যাওয়া ব্রীজ থেকে চলাচলের প্রধান রাস্তাটি বিছিন্ন হওয়ায় স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব হীনতা গ্রাম বাসীদের রিতিমতো ভাবিয়ে তুলছে। কৃষি কাজ এবং উৎপাদিত ফসলাদি নির্ভর গ্রামটির সার্বিক যোগাযোগ ব্যবস্থার করুণ অবনতি নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই। ওয়ার্ড সংশ্লিষ্ট জনপ্রতিনিধি (মেম্বর) কতটুকু দায়িত্ব পালন করছেন এনিয়ে ওই গ্রামের সচেতন মানুষেরা নানা কথা জানান এ প্রতিবেদককে।
অনুপযোগী রাস্তা; এর ওপর ভেঙ্গে যাওয়া ব্রীজ। এই দুটি কারণে দৈনন্দিন যাতায়াত ব্যবস্থার দৈন্যদশার মধ্যে পড়তে হচ্ছে বেড়ের বাড়ী গ্রাম বাসীকে। গ্রামটির যোগাযোগ ব্যবস্থার (রাস্তা ও ব্রীজ) সংস্কার অবহেলায় সবচেয় বেশি কষ্ট ভোগ করতে হচ্ছে কোমলমতি শিক্ষার্থী ও বয়স্ক মানুষদের।
বেড়ের বাড়ী গ্রামের বাসিন্দা মো. শাহ আলম বলেন, এক বছর হলো ব্রীজটা ভেঙ্গে পড়ে আছে। ফলে গাড়ী-ঘোড়া, ভুট্রা, ধান, গমসহ সকল সফলাদির সিজনে সব কিছু বিক্রি করা অত্যাধিক সমস্যা হয়ে পড়েছে আমাদের (গ্রামবাসী)। এছাড়া ব্রীজে একটা ঝুকি আছে। যেকোন গাড়ী তুলে দিলে গাড়ী ও মালামাল ক্ষতি হতে পারে।
জানা গেছে, উপজেলার প্রত্যান্ত গ্রাম বেড়ের বাড়ী। ৩নং খামারকান্দি ইউনিয়ন পরিষদের মধ্যে গ্রামটি অবস্থিত। গ্রামের চারপাশ দিয়ে বয়ে গেছে খাল ও বিল। আদিকালে গ্রামের বসবাসরত মানুষের কর্মসংস্থান কৃষি কাজের উপর নির্ভার হয়ে থাকলেও বর্তমানে শিক্ষা ও ব্যবসায় পরিবর্তনের ছোঁয়া পেয়েছেন ওই গ্রামের মানুষ। কিন্তুু কৃষি সমৃদ্ধ গ্রামটির মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটলেও উল্লেখযোগ্য ভাবে ব্যাঘাত ঘটছে যোগাযোগ (রাস্তা-ঘাট, ব্রীজ ও কালভার্ট) ব্যবস্থার।
সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, পাশ্ববর্তী গ্রাম শুভগাছা জাঙ্গাল পাড়া থেকে বেড়ের বাড়ী গ্রামের (পশ্চিম পার্শে) প্রবেশের সাকো ব্রীজটি অর্ধেক পরিমাণ ভেঙ্গে খালের সঙ্গে মিশে গেছে। গ্রামের মানুষের চলাচলের একমাত্র রাস্তার ওই ব্রীজটি দীর্ঘদিন ধরেই কর্তৃপক্ষের উধাসীনতা ও অবহেলায় মেরামতের অযোগ্য হয়ে পড়ে আছে।
বেড়ের বাড়ী গ্রামের অনেকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পুর্ব পাকিস্তান সময়কালীন গ্রামের পশ্চিম পার্শ্বে খালের ওপর সাকো ব্রীজটি (ঙেঙ্গে যাওয়া) তৈরী করা হয়। স্বাধীনতার পর অনেক চেয়ারম্যান-মেম্বর নির্বাচিত হলেও কেউ-ই ব্রীজটির সংস্কার কাজের উদারতা দেখায়নি।
এদিকে ওই সাকোর মেরুদন্ড ভেঙ্গে অর্ধেক হওয়ায় ভ্যান গাড়ী, মোটর বাইক ও বাইসাইকেলসহ কোন প্রকার যান চলাচল করতে পারছে না গ্রামের বসবাসরত ও পথচারীরা। সন্ধ্যার পর অন্ধকার নেমে আসলেই অনেকেই চরম দুর্ঘটনার স্বীকারও হচ্ছেন বলে জানা গেছে। ব্রীজটির ভাঙ্গা স্থানে পা পড়ে অনেকেই দুর্ঘটনার মুখামুখি হয়েছেন। এমন নজিরও আছে।
শাহ আলম বলেন, ব্রীজটা ভেঙ্গে অরক্ষিত থাকার কারণে যাতায়াত সমস্যা দিন দিন প্রকট হচ্ছে। শুধু মানুষদের চলাচল সমস্যা নয়, রিক্সা-ভ্যান ও ভারি গাড়ী চলতে পারে না। ব্রীজ ফাটল ধরে গেছে। কখন মানুষ ক্ষতিগ্রস্থ হবে বলা যাচ্ছে না। যেহুত বীজটার মুল এক অংশে (মেরুদন্ড) ভেঙ্গে গেছে।
তিনি বলেন, ব্রীজটা নিচু হওয়ার কারণে সাম্প্রতিক বয়ে যাওয়া বন্যায় কোমর পরিমাণ পানি ছিলো ব্রীজের ওপর। সেসময় আমি সহ এলাকার অনেকেই ব্রীজের ওপর দিয়ে চলাচল করতে সাহস পাইনি। এছাড়া ব্রীজটার ওই ভাঙ্গা অংশে একজন পড়ে গিয়ে গুরুতর অহত হয়েছিলো বলে জেনেছি।
স্থানীয় চেয়ারম্যানের ভূমিকা নিয়ে তিনি বলেন, চেয়ারম্যান গুরুত্ব দিলে ব্রীজটা অনেক আগেই মেরামত হয়ে যেত। তার এবিষয়ে গুরুত্ব কম দেখা যাচ্ছে। আর একালার মেম্বর তো নির্বাচনের পর একদিনও আমাদের গ্রামে আসেনি। তাকে দেখেছি বলে চখে পড়েনি।
তিনি আরো বলেন, চেয়ারম্যান (নির্বাচন সময়) যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলো (রাস্তা-ঘাট, ব্রীজ-কালভার্ট, ইত্যাদি) বর্তমান সে প্রতিশ্রুতির কোন মিল নেই।
খামারকান্দি ইউনিয়ন পরিষদ ওয়েব সাইট থেকে প্রাপ্ত তথ্য মতে, বেড়ের বাড়ী গ্রামে পুরুষ ও নারী মিলে ৫৭৫ জন নাগরিক বসবাস করছেন।
জানতে চাইলে খামারকন্দি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. আবদুল ওহাব (মোবাইল ফোনে) বলেন, বেড়ের বাড়ী গ্রামের ওই সাকো ব্রীজ-এর টেন্ডার কাজ হয়ে গেছে। এরমধ্যে ব্রীজটির কাজ নির্ধারিত ঠিকাদারকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাদের নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সংস্কার কাজ শুরু হবে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আশা করা যাচ্ছে অল্প দিনের মধ্যেই সংস্কার কাজ শুরু হবে।
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.