- গণঅভ্যুত্থানে শাহাদৎ বরণকারীদের রুহের মাগফিরাত কামনা ধনবাড়ীতে বিএনপির উদ্যোগে - October 19, 2024
- কাজীপুর জবর দখলকৃত জমিতে রোপন করা ফসল নষ্ট করে উল্টো প্রকৃত জমির মালিককে ফাসানোর চেষ্টা - October 18, 2024
- ধনবাড়ীতে ইউনিয়ন বিএনপির উদ্যোগে এক বিশাল জনসভা - October 18, 2024
পুরুষের একসঙ্গে একাধিক বউ থাকলেও সেটি খুব একটা খারাপ চোখে দেখা হয় না। কিন্তু একজন নারীর একসঙ্গে একাধিক স্বামী থাকাটা অন্যায় হিসেবে দেখা হয়। তবে ভারতের হিমাচল প্রদেশের একটি অঞ্চলের রীতি হলো সকল সহোদর ভাইদের জন্য বউ মাত্র একজন। সমাজের রীতি পালন করতে এক তরুণীর সঙ্গে একই পরিবারের সব ভাইদের বিয়ে দেওয়া হয়!
হিমাচল প্রদেশের ইন্দো-তিব্বতের সীমানার কাছের একটি জেলা কিনৌর। এখানে চালু রয়েছে এই প্রথা। মহাভারত অনুসারে, ১৩ বছরের জন্য রাজ্য থেকে নির্বাসিত হয়েছিলেন পাণ্ডবরা। স্থানীয়দের বিশ্বাস, তারা নাকি তখন এই কিনৌরেই লুকিয়ে ছিলেন। সেই থেকেই এই অঞ্চলে মহিলাদের বহু বিবাহের প্রচলন।
ওই অঞ্চলের বহু কিনৌর তাই এখনও নিজেদের পাণ্ডবদের বংশধর বলে দাবি করেন। যদিও এই নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। কারণ ইতিহাসবিদদের মতে, পাণ্ডবদের অনেক আগে থেকেই কিনৌরিদের উল্লেখ রয়েছে মহাভারতে।
এখানে একটি পরিবারে বিয়ে হয়ে আসা তরুণীকে একই সঙ্গে তার স্বামীর অন্য ভাইদেরও বিয়ে করতে হয়। বিয়ে করে আসার পর যতগুলো সন্তানের জন্ম তিনি দেবেন, তাদের প্রকৃত বাবার পরিচয়ের জন্য পুরো পরিবার ওই তরুণীর কথাতেই ভরসা রাখে। তবে প্রকৃত বাবা যিনিই হন না কেন, প্রতিটা সন্তান বড়ভাইকেই বাবা সম্বোধন করবে এবং বাকিদের কাকা।
কিন্তু কেন এমন রীতি? এটা কি নিছকই মনগড়া? বিশেষজ্ঞদের মতে, এই রীতি আত্মস্থ করার পিছনে প্রচীন কিনৌরদের আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতি একটা বড় কারণ। পাহাড়ি, দুর্গম এলাকা হওয়ায় কিনৌরের আর্থিক অবস্থা একেবারেই ভাল ছিল না। প্রতিটা পরিবারেরই সম্বল ছিল নামমাত্র জমি। তা এতটাই কম ছিল, যে ভাইদের মধ্যে পরবর্তীকালে ভাগাভাগি হলে সে ভাগের জমি থেকে যা আয় হবে তাতে সংসার চালানো কার্যত অসম্ভব।
ইতিহাসবিদদের মতে, ছেলেদের বিয়ের পর জমি যাতে ভাগ না হয় সেই চিন্তাভাবনা থেকেই ‘দ্রৌপদী’ প্রথার প্রচলন এই অঞ্চলে। তবে শুধু কিনৌর নয়, ভারতের বেশ কিছু উপজাতির মধ্যে মহিলাদের বহু বিবাহ প্রথা চালু রয়েছে এখনও। দক্ষিণ ভারতের পশ্চিমঘাট পর্বতমালার নীলগিরির টোডাস এবং উত্তর ভারতে মুসৌরি থেকে ৮৫ কিলোমিটার দূরে জওনসর-বাওয়ার অঞ্চলের উপজাতিদের মধ্যেও এই রীতি দেখা যায়।
কিনৌরিদের আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতি আগের এখন অনেকটাই ভাল। পর্যটন শিল্পের বিকাশ হয়েছে। নতুন প্রজন্মের মধ্যে শিক্ষার প্রতি আগ্রহ বেড়েছে। এ কারণে এই প্রাচীন প্রথা অনেকটাই কমে এসেছে।