- The story of Idris Ali, a humanitarian police inspector of Dhanbari police station - October 19, 2024
- গণঅভ্যুত্থানে শাহাদৎ বরণকারীদের রুহের মাগফিরাত কামনা ধনবাড়ীতে বিএনপির উদ্যোগে - October 19, 2024
- কাজীপুর জবর দখলকৃত জমিতে রোপন করা ফসল নষ্ট করে উল্টো প্রকৃত জমির মালিককে ফাসানোর চেষ্টা - October 18, 2024
আশিক আহমেদ
নারী পুলিশ ও ব্যাটালিয়ন পুলিশের প্রকল্পের জন্য ডেমরা থানার কায়েৎপাড়া মৌজায় প্রায় ৩০ শতক জমি অধিগ্রহণ করেছে সরকার। জমির মালিক ওয়ালিউল্লাহ অধিগ্রহণের টাকা পেয়ে গেছেন দেড় মাসেই। তার ধারণা ছিল না এত কম সময়ে টাকা পাওয়া যাবে। তাও এর জন্য কোনো ধরনা দিতে হয়নি, টেবিলে টেবিলে ঘুরতে হয়নি, কেউ ঘুষ দাবি করেনি, কেউ কাজটা এগিয়ে নেওয়ার কথা বলে বাড়তি পয়সা চায়নি।
ভূমি অধিগ্রহণের ক্ষতিপূরণ পেতে হয়রানি আর দুর্নীতির অভিযোগ থেকে মুক্তি দিতে নতুন একটি পদ্ধতি চালু হয়েছে, যার সুফল পেয়েছেন ওয়ালিউল্লাহ। ঢাকা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে গত জানুয়ারি থেকে ‘অটোমেটিক কমপেনসেশন পেমেন্ট সিস্টেম’ বা এসিপিএস নামে এই স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতি চালু হয়েছে।
এরই মধ্যে এই পদ্ধতিতে ক্ষতিপূরণের অর্থ পেতে এক হাজার ৪০৭টি আবেদন জমা পড়েছে। এর মধ্যে অনেক আবেদন নিষ্পত্তি করে প্রায় ২০০ কোটি টাকার ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে। এ জন্য কারো ধরনা দিতে হয়নি অন্য কোথাও।
ওয়ালিউল্লাহ ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘অনলাইনে আবেদন করার সুবিধা হচ্ছে আমি ঘরে বসেই কারও সহযোগিতা ছাড়াই আবেদন করতে পারছি। ঘরে বসেই আমার ফাইলের আপডেট তথ্য পাচ্ছি। জানতে পারছি আমার কেসের সর্বশেষ তথ্য।’
‘আমার কাছে খুব ভালো লাগছে এই ধরনের প্রকল্প করলে সহজেই সাধারণ মানুষ উপকার পাবে। এটা সরকারের খুব ভালো একটি প্রকল্প।’
ঢাকা জেলা প্রশাসনের চালু করা এই পদ্ধতিতে অনলাইনে আবেদন করতে হয়। আর ৬০ দিনের মধ্যে আবেদনের নিষ্পত্তি হয়। তবে কোনো আবেদনের বিষয়ে আপত্তি বা বিরোধ থাকলে দুই পক্ষকে ডেকে শুনানি হয়। সে ক্ষেত্রে এই ৬০ দিনের সময়সীমা প্রযোজ্য হয় না।
সরকারি প্রকল্পে অধিগ্রহণ করা জমির টাকা বুঝে পেতে দুর্নীতি আর হয়রানির অভিযোগ নতুন নয়। জমি হারিয়ে সময় মতো টাকাপয়সা না পাওয়ায় মালিকদের জীবনে নানা ভোগান্তির তথ্য আছে। আবার আছে ঘুষ দিতে বাধ্য করার মতো ঘটনা। কর্মকর্তাদের টাকা না দিলে ফাইল হারিয়ে যায়।
তবে ঢাকা জেলা প্রশাসন যাদের জমি অধিগ্রহণ করে, সেখানে এই হয়রানিগুলো অতীত হয়ে গেছে। ঘরে বসে আবেদন করা যায়, কার ফাইল কোন কর্মকর্তার কাছে আছে সেটা জানা যায়, একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে টাকা হাতে পাওয়া যায়।
এই পদ্ধতিতে ক্ষতিপূরণের আবেদনের করার পর সার্ভেয়ারের কাছে ৩০ দিন থাকে; এই সময়ের মধ্যে সার্ভেয়ার তার শেষ করে কানুনগোর কাছে দেন। কানুনগোর কাছে এই ফাইল থাকে সর্বোচ্চ ১০ দিন। এই সময়ে মধ্যে তিনি তার কাজ শেষ করে অতিরিক্ত ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তার কাছে দেন। তিনি পাঁচ দিনের মধ্যে সে ফাইল পাঠান ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তার কাছে। তিনিও পাঁচ দিনের মধ্যে তার কাজ শেষ করে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের কাছে দেন।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকও পাঁচ দিনের মধ্যে তার কাজ শেষ করে সহকারীর কাছে দেন। ওই সহকারী আরও পাঁচ দিনের মধ্যে চেক প্রস্তুত করবেন। নির্ধারিত সময়ে মধ্যে নিষ্পত্তি না করলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার বিধান রয়েছে।
এসিপিএস পদ্ধতিতে দেশে ও বিদেশের যেকোনো স্থান থেকে অনলাইনে ক্ষতিপূরণের আবেদন করা যায়। আর নিষ্পত্তির প্রতিটি স্তরে রয়েছে নির্ধারিত সময়, যা ড্যাশ বোর্ডের মাধ্যমে নিয়মিত তদারকি ও নিশ্চিত করার ব্যবস্থা রয়েছে।
দাগসূচি যৌথ তদন্ত, মূল্যহার, ভূমি রেকর্ডসহ সংশ্লিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে স্বয়ংক্রিয়ভাবে প্রস্তুতকৃত দাগ ভিত্তিক মালিকানার প্রতিবেদন, ক্ষতিপূরণের হিসাব ও নির্ভুল রোয়েদাদ-এ পদ্ধতির গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য।
ঢাকার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক তানভীর আহমেদ ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘আবেদন দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য ও যে কোনো স্থানে বসে আবেদনের সব শেষ তথ্য জানার জন্য এই প্রক্রিয়া চালু করা হয়। এই প্রক্রিয়ায় কবে আবেদন করা হয়েছে, কার কাছে কত দিন আবেদন রয়েছে সেট যেকোনো স্থানে দেখতে পারবে। এই ভোগান্তি ছাড়াই ক্ষতিপূরণ দেওয়া সম্ভব।’
যেভাবে আবেদন করবেন
যেকোনো এনড্রোয়েড প্লে স্টোর থেকে land acquisition dhaka লিখে সার্চ দিয়ে এসিপিএস অ্যাপটি ডাউনলোড করে মোবাইল থেকেই ক্ষতিপূরণের আবেদন করা যায়। এই অ্যাপেই থাকে অভিযোগ বা আবেদনটি কোন পর্যায়ে আছে, সেটি জানার উপায়।
এ ছাড়া অনলাইনে www.ladhaka.gov.bd ঠিকানায় ঢুকে ক্ষতিপূরণের জন্য আবেদন করা যায়। পেইজের সব ঘর পূরণ করে পাসপোর্ট সাইজের একটি ছবি আপলোড দিয়ে নিবন্ধন করতে হয়। নিবন্ধন করলে মোবাইল ফোন নম্বরে একটি কোড আসে। কোডটি ব্যবহার করে নতুন পাসওয়ার্ড রিসেট করে নতুন আবেদন করতে হয়।
এরপর মোবাইল ফোনে নিশ্চিতকরণ একটি এসএমএস যাবে আবেদনটি প্রদর্শিত হবে।
আবেদনে সই করে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের মূল সার্টিফাইড কপিসহ তিনদিনের মধ্যে এলএ শাখায় ফ্রন্ট ডেস্কে জমা দিতে হয়।