দুর্গাপুরে শিশুশ্রমেই চলছে ওয়ার্কসপ

0

 

দুর্গাপুর(নেত্রকোনা)প্রতিনিধি

দুর্গাপুর চকলেঙ্গুরা গ্রামের শিশু রবিন মিয়া, বয়স ১১। বাবা মারা গেছে জন্মের কয়েক মাস পরেই। মা আর ১৪ বছরের বড় বোন নিয়েই রবিনের সংসার। স্কুলের দরজায় পা পড়েনি তাঁর। জীবিকার তাগিদে সকাল ৮টায় ছুটে যায় ওয়ার্কসপে। কাজ চলে রাত ৮টা পর্যন্ত। দিন শেষে পায় ৮০ থেকে ১০০ টাকা।

এ নিয়ে শনিবার বিভিন্ন ওয়ার্কসপ গুলোতে ঘুরে দেখাগেছে, সকালে স্কুলে যাওয়ার কথা থাকলেও রবিনের জীবনে তা বাস্তবে রূপ নেয়নি। দুর্গাপুর উপজেলায় তার মতো অসংখ্য রবিন প্রতিদিন বিদ্যাপীঠে যাওয়ার পরিবর্তে ঝুঁকিপূর্ণ পরিবহন, ওয়েল্ডিং, হোটেল, ইটভাটা, চায়ের দোকান, রাজমিস্ত্রীর জোগালো কাজ সহ বিভিন্ন কাজে শিশু শ্রমিকের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলছে। ২০০২ সালে সরকার ঝুঁকিপূর্ণ পেশায় শিশুশ্রম নিরসনে একটি প্রকল্প হাতে নিলেও এর অস্তিত্ব খুব একটা চোখে পড়েনি অত্র এলাকায়। অথচ বাংলাদেশ জাতিসংঘের শিশু অধিকার সনদে স্বাক্ষর দানকারী প্রথম সারির রাষ্ট্রসমূহের মধ্যে একটি। বিরিশিরি বাসস্ট্যান্ড এলাকায় প্রায়ই দেখা যায় ছোট শিশুদের হাতে রিক্সা বা অটোগাড়ীর হ্যান্ডেল। ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও তারা স্কুলে যেতে পারে না। অথচ ওদের রিকশায় চড়ে অন্য শিশুরা স্কুলে যায় প্রতিদিন। সুবিধাবঞ্চিত এই শিশুরা বলছে, পরিবারের আর্থিক টানা পোড়েনের কারণেই তাদের এ কাজ করতে হচ্ছে।

দুর্গাপুর থেকে কলমাকান্দা সড়কের মাহেন্দ্র গাড়ীতে ১২ বছর বয়সী হেলপার রাজন এ প্রতিনিধিকে জানান, প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত একটানা পরিশ্রম করতে হয়। রোদ-বৃষ্টি, ঝড় কোনো কিছুই তার কাজে বাঁধার সৃষ্টি করে না। তাকে প্রতিদিনই যথারীতি কর্মস্থলে চলে আসতে হয়, না আসলে হয়তো তাকে না খেয়ে দিনাতিপাত করতে হবে। একই অবস্থা তার মত অসংখ্য শিশুর।

উপজেলার মানবাধিকার কর্মী ও সাংবাদিক সুমন রায় জানান, আগামী দিনের দেশের ভবিষ্যত কর্ণধারদের সুষ্ঠু জীবনযাপন নিশ্চিতকরণে জাতিসংঘের শিশু অধিকার সনদের নীতিগুলোর পাশাপাশি শিশু শ্রম বন্ধে সরকারকে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।

Leave A Reply