আজ ডেঙ্গুতে ঢাকা, চাঁদপুর ও মাগুরায় নারীসহ ৩ জনের মৃত্যু

0
নিজস্ব প্রতিবেদক

ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ঢাকা, চাঁদপুর ও মাগুরায় নারীসহ তিনজনের মৃত্যু হয়েছে।

বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ২৫ বছর বয়সী মৌসুমী আক্তার মারা যান। চাঁদপুরের ১৪ বছর বয়সী মাদ্রাসা ছাত্র আবু বকর সিদ্দিক ঢাকায় আনার পথে মারা যায়। আর ডেঙ্গু আক্রান্ত মাগুরা সদরের জয়নাল শরীফ (৫২) নামে এক ব্যক্তি নিজ বাড়িতে মারা গেছেন।

গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ১ হাজার ৯শ ২৯ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। সে হিসেবে ঈদের আগের কদিনের তুলনায় রোগীর সংখ্যা বাড়ছে।

ঢাকা টাইমসের ঢাকা মেডিকেল প্রতিনিধি জানান, ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত মৌসুমী ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। বৃহস্পতিবার বেলা পৌনে ১২টার দিকে তার মৃত্যু হয়। তিনি পিরোজপুরের মো. মামুনের স্ত্রী।

পরিবারের সদস্যদের বরাত দিয়ে ঢামেক পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বাচ্চু মিয়া জানান, কয়েকদিন ধরে জ্বরে আক্রান্ত মৌসুমীর গত বুধবার রাজধানীর মহাখালীর টিবি হাসপাতালে পরীক্ষায় ডেঙ্গু ধরা পরে। সেখান থেকে তাকে প্রথমে সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে অবস্থার আরও অবনতি হলে ঢামেক হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) মৌসুমী মারা যান।

মাগুরা প্রতিনিধি জানান, সদর উপজেলার নরসিংহাটি গ্রামে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে জয়নাল শরীফ (৫২) নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। গতকাল বেলা সাড়ে ১২টায় নিজ বাড়িতে তার মৃত্যু হয়। জয়নাল নরসিংহাটি গ্রামের গফুর শরীফের ছেলে। তিনি ঢাকার একটি বেসরকারি সিকিউরিটি সার্ভিসে কর্মরত ছিলেন।

নিহত জয়নালের ভাই হারুন অর রশিদ জানান, গত ৮ আগস্ট জয়নাল ঢাকা থেকে জ্বরে আক্রান্ত হয়ে একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে রক্ত পরীক্ষা করতে দিয়ে ওইদিনই বাড়িতে চলে আসেন। ঢাকার রিপোর্টের ভিত্তিতে ৯ আগস্ট রাতে তিনি জানতে পারেন তার ডেঙ্গু হয়েছে।

এ অবস্থায় ১০ আগস্ট তিনি মাগুরা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে ভর্তি হন। সেখানে আবারো তার ডেঙ্গু পরীক্ষা করার পর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে ওইদিনই তাকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। সেখানে তার শারীরিক অবস্থার আরো অবনতি হলে চিকিৎসকরা ঢাকায় নেওয়ার পরামর্শ দেন। কিন্তু তার পরিবারের লোকজন তাকে ঢাকায় না নিয়ে বুধবার বাড়িতে নিয়ে আসেন। গতকাল নিজ বাড়িতেই তিনি মারা যান।

মাগুরার সিভিল সার্জন ডা. প্রদীপ কুমার সাহা জানান, জয়নাল ঢাকা থেকে জ্বরে অক্রান্ত হয়ে ১০ আগস্ট মাগুরা হাসপাতালে আসেন। সেখানে ডেঙ্গু পরীক্ষার পর তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে ওইদিনই তাকে ফরিদপুর মেডিকেলে রেফার্ড করা হয়। গত বুধবার সেখান থেকে ঢাকায় রেফার্ড করা হলে পরিবারের সদস্যরা তাকে বাড়ি নিয়ে যান। নিজ বাড়িতে তিনি মারা গেছেন।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া বলেন, গত কয়েকদিনে ডেঙ্গু রোগী ভর্তির সংখ্যা কমেছে। এছাড়া সরকারের সমন্বিত উদ্যোগের কারণে শিগগিরই পরিস্থিতির উন্নতি হবে বলে আশা প্রকাশও করেন তিনি।

তিনি বলেন, ‘ঈদ ও ঈদের পরবর্তী সময়ে আমাদের কাছে মনে হচ্ছে রোগীর চাপ একটু কম। তবে, রোগীর পরিমাণ বাড়বে কিনা তা আগামী সপ্তাহ দেখলেই বোঝা যাবে। চিকিৎসা সেবার জন্য যে সকল রোগী আসছে তাদের উপস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে চাপ কম।’

Leave A Reply