দুর্গাপুরে ঝুকিপুর্ন ভবনেই চলছে বিচারিক কার্যক্রম

0

 

যে কোন মুহুতে ঘটতে পারে প্রাণহানী

তোবারক হোসেন খোকন, দুর্গাপুর(নেত্রকোনা)প্রতিনিধি

নেত্রকোণা জেলা শহরের বাহিরে উপজেলা পর্যায়ে একমাত্র সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালত ও অতিরিক্ত সহাকারী জজ আদালত রয়েছে দূর্গাপুরে। সুসং পরগনার রাজাদের অনুরোধে বৃটিশ সরকার সীমান্ত এলাকায় জনগণের সুবিধার্থে দূর্গাপুরে দেওয়ানী ও ফৌজদারী আদালতের ব্যবস্থা করেন। তখন এই দুইটি আদালতই একজন ম্যাজিষ্ট্রেট পরিচালনা করতেন। এটিকে বলা হতো চৌকি। বর্তমানে দূর্গাপুর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালত ভবনটি জ¦রাজীর্ণ হয়ে ভীতিকর অবস্থায় রুপ নিয়েছে। যেকোন মূহুর্তে ভেঙে পরতে পারে ভবনটি। প্রাণহানী ঘটতে পারে অসংখ্য মানুষের।

এ নিয়ে রোববার সরেজমিনে গিয়ে জানাগেছে, দুর্গাপুর সিনিয়র ম্যাজিষ্ট্রেট আদালত ভবনটি ১৯৮৫ সালে নির্মাণ করা হয়, কয়েকবছর আগে থেকে এই ভবনের বিভিন্ন স্থানে ছাদের প্লাস্টার খসে গিয়ে অসংখ্য গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। সামান্য বৃষ্টি হলেই ছাদ চুয়ে পানিতে ভিজে যায় মূল্যবান নথিপত্র। ব্যাঘাত ঘটে বিচারিক কার্যক্রমের। তাছাড়া ভবনটি এতই জ¦রাজির্ণ, যেকোন মূহুর্তে ধ্বসে গিয়ে প্রাণহানী ঘটাতে পারে অসংখ্য মানুষের। প্রতিবছরই অল্প অল্প সংস্কার কাজ করা হলেও পুর্নাঙ্গ সংস্কার না করায় জায়গাটি কিছুদিন পর আবার আগের অবস্থায় ফিরে আসে। এতে ভোগান্তীর সৃষ্টি হয়েছে ম্যাজিষ্ট্রেট কোর্টের বাদী, বিবাদী, আইনজীবীসহ অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারীদের। ব্যাঘাত ঘটছে বিচারিক কার্যক্রমের। সংশ্লিষ্টদের দাবী ভবনটি ভেঙে নতুন ভবন তৈরী করলে সুষ্ঠ ও সুন্দরভাবে চলতে পারে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালত।

এ ব্যাপারে দূর্গাপুর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট কোর্ট আদালতের সিনিয়র আইনজীবি মানেশ চন্দ্র সাহা বলেন, ১৯৮৫ সালে এই কোর্ট ভবনে বিচারিক কার্যক্রম শুরু হয়। কিন্তু ঐ সময় বিল্ডিং নির্মাণে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের অনিয়মের জেরেই এই ভবনটি এত অল্পসময়ে ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পরেছে। বর্তমানে এই ভবনের যা অবস্থা, তাতে যেকোন সময় হতাহতের ঘটনা ঘটতে পারে। তাছাড়া বর্ষার দিনে এজলাসের ভিতরেও পানি পরে। যার দরুন নষ্ট হয়ে যায় গুরুত্বপূর্ণ অনেক নথিপত্র। তাই সবসময় শঙ্কিত অবস্থায় কাজ করতে হয় আমাদের। অতি দ্রুত এই ভবনটি নতুন করে নির্মাণের কোন বিকল্প নেই।

এ নিয়ে নেত্রকোণা গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ বাহাদুর আলী জানান, ২০১৭ সালে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয়ের সচিব সরেজমিনে উক্ত কোর্ট ভবনটি ভেঙে টিনশেড বিল্ডিং নির্মাণের নির্দেশ প্রদান করেন। উক্ত নির্দেশ মোতাবেক প্রাক্কলন পরিকল্পনা পাঠানোর পর এখন পর্যন্ত বরাদ্দ না আসায় কোর্ট ভবনটি নতুন করে নির্মান করা যাচ্ছে না।

বিচারালয় মানুষের মৌলিক অধিকার সংরক্ষনের প্রধানস্থল। কাজেই এই বিচারালয়ের বিচারিক কার্যক্রম নির্ভিঘেœ ও সুন্দরভাবে চলুক এটাই কাম্য হওয়া উচিত। সেই প্রেক্ষিতে দূর্গাপুর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালত ভবনটি ভেঙে নতুন ভবন নির্মাণ করা হোক এমনটাই প্রত্যাশা সংশ্লিষ্ট ও এলাকাবাসীর।

Leave A Reply