- আওয়ামী লীগের একনিষ্ঠ কর্মী রতনের মৃত্যু জানাযায় নেতার কান্নায় শোকে শিহরিত জনতা - September 21, 2023
- মতলবে ভাগিনার হাতে মামা খুন - September 20, 2023
- ঠাকুরগাঁওয়ে নবাগত ইউএনও’র সাথে অনলাইন প্রেসক্লাবের মতবিনিময় - September 20, 2023

মোঃকামাল হোসেন, দোহার ঢাকা :
প্লাস্টিক সামগ্রীর প্রসার, প্রয়োজনীয় পুঁজি, পরিকল্পিত উদ্যোগের অভাবে চরম অস্তিস্থ সংকটে দোহার নবাবগঞ্জেরর বাঁশ শিল্প। উৎপাদিত পণ্য সামগ্রীর ন্যায্য মূল্য না থাকায় এ শিল্পের সঙ্গে জড়িতদের অনেকেই পাল্টাতে শুরু করেছেন পেশা। দারিদ্রতাকে আলিঙ্গন করে পিতৃ পুরুষের ঐতিহ্যবাহী পেশাকে যারা আগলে রয়েছেন তারাও রয়েছেন নানা সমস্যায়। বাজারে প্রচলিত প্লাস্টিক দ্রব্য সামগ্রীর সঙ্গে পাল্লা দিতে না পেরে তারাও হয়ে পড়েছেন কোনঠাসা। ফলে আবহমান বাংলার এ শিল্পের ঐতিহ্য হারানোর পাশাপাশি বাঁশ শিল্পীদের ভাগ্যে নেমে এসেছে দুর্দিন। একসময় মানুষের নিত্য প্রয়োজনীয় অনুষঙ্গের মধ্যে বাঁশের তৈরি দ্রব্য সামগ্রীর প্রয়োজনীয়তা ছিল অনেক। কুলা, খাঁচা, চালনি, চাটাই, ডোল, ঝুড়ি, পলো, ডালা প্রভৃতি বাঁশজাত পণ্যের ছিল ব্যাপক চাহিদা। কিন্তু কালের বিবর্তনে আধুনিক বিজ্ঞানের প্রসারতায় বর্তমানে বাঁশের তৈরি এসব সামগ্রীর অনেক পন্যই তৈরি করছে প্লাস্টিক পন্য র্নিমান প্রতিষ্ঠান। সাশ্রয়ী মূল্যসহ টেকসই ও স্থায়ীত্বের কারনে এসব প্লাস্টিক সামগ্রী দিনদিন জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে সাধারনের ব্যবহারে। ফলে প্রতিনিয়ত কমছে বাঁশের তৈরি পন্য সামগ্রীর কদর। উপজেলাদ্বয়ের প্রতিটি গ্রামীন জনপদে বাশেঁর তৈরি সামগ্রী তৈরি হলেও এর বড় একটি অংশের জোগান হত দোহার উপজেলা থেকে। এক সময়ে এ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ছিল প্রায় শতাধিক বাঁশ শিল্পী পরিবারের বসবাস। বাশেঁর সামগ্রী তৈরি করে স্বাচ্ছন্দ্যময় জীবন যাপনসহ আথিৃক স্বচ্ছলতা ফিরিয়ে আনতো পরিবারগুলো । কিন্তু বিগত কয়েক বছর ধরে বাশঁ শিল্পে বিরাজ করছে চরম মন্দাবস্থা। একদিকে ব্যবহারকারীর অভাব, অন্যদিকে বাঁশের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধির কারণে বাঁশ শিল্পীদের অনেকেই তাদের পৈত্রিক পেশা ছেড়ে দিয়ে অন্য পেশায় চলে যাচ্ছেন। ফলে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা হাতে গোনা কয়েকজন শিল্পী অনেকটা নিরুপায় হয়ে এ পেশায় টিকে থাকার জন্য প্রাণপণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এ কুটির শিল্পের ওপর নির্ভরশীলতায় যে সব শিল্পীরা রয়েছেন, তারাও অনেকে বেকারত্বসহ আর্থিক দৈন্যতায় মানবেতর জীবন যাপন করছে। বাঁশ শিল্পী আয়নাল জানান, বাপ দাদার পেশা তাই আকড়ে ধরে আছি। ছেলে-মেয়েরা এখন আর এ পেশায় থাকতে চাচ্ছেনা। পরিশ্রম বেশি, লাভ কম। আগের মত চাহিদাও নেই। ঝরনা রানী জানান, বাশেঁর দাম বেড়ে গেছে। পুজিঁ সংকট রয়েছে। চাহিদা ও মুনাফা ভাল না থাকায় পরিবারেও যাচ্ছে দুর্দিন। আধুনিক প্রযুক্তির প্লাটিক সামগ্রীর ব্যবহার বেড়ে যাওয়ায় এ শিল্পের ক্ষুদ্র বিক্রেতাদেরও যাচ্ছে দুর্দিন। বাঁশের তৈরি সামগ্রীর বিক্রেতা হরেন পাল জানান, এক যুগ আগেও ছিল বাশের সামগ্রীর কদর। পরিবারের দৈনন্দিন কাজে বাঁশের তৈরি কুলা, চালনি, ঝুড়ি, ডালা মানুষ ব্যবহার করত। এখন এসব পন্য প্লাস্টিকের পাওয়া যাচ্ছে। ফলে বেচা-বিক্রি খুবই কমে গেছে। এখন খাঁচা, চাটাই, ডোল, পলো এসব বিক্রি হচ্ছে। এসবেরও এখন আগের মত চাহিদা নেই। চিরায়ত বাঙালি সংস্কৃতির অংশ পরিবেশ বান্ধব বাঁশ শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে, পেশা সংশ্লিস্টদের বিনা সুদে কিংবা স্বল্প সুদে পরিবার ভিত্তিক ব্যাংক ঋণের ব্যবস্থা গ্রহনসহ পৃস্টপোষকতা প্রদান করা জরুরী বলে মনে করছেন অভিজ্ঞরা