- কিশোরগঞ্জে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ, ৬৯ শতাংশ জমি উদ্ধার - November 7, 2024
- জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবসে কিশোরগঞ্জে বিএনপি’র বর্ণাঢ্য র্যালি - November 7, 2024
- ৭নভেম্বার ঐতিহাসিক মহাবিপ্লবের নাম - November 7, 2024
সাইফুর রহমান শামীম, কুড়িগ্রাম।।জীবন-জীবিকার একমাত্র অবলম্বন হিসেবে বেঁচে নিয়ে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী ঘানি শিল্পকে আজও আঁকড়ে ধরে আছেন। দেশের বিভিন্ন এলাকায় শিল্পটি বিলুপ্ত হতে বসলেও কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে রুহুল আমিন (৭২) বাপ-দাদার পৈতৃক পেশাকে জীবনের শেষ বয়সে এসেও পরিবর্তন করেননি। তার বাড়ী উপজেলার সীমান্তবর্তী নাওডাঙ্গা গ্রামে। তিনি ঐ গ্রামের মৃত রহিম উদ্দিনের ছেলে।
আধুনিক আর ডিজিটাল যুগেও আবহমান গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী শিল্পটি দীর্ঘ ৫০ বছর ধরে এ পেশার সঙ্গে যুদ্ধ করে টিকিয়ে রেখেছেন। দেশের বিভিন্ন এলাকায় এই শিল্প হারিয়ে গেলেও তিনি হারিয়ে যাওয়ার ভিড়ে আজও বাহাত্তর বছরের লড়াকু সৈনিক রুহুল আমিন এই ঘানি টেনেই জীবন-জীবিকা নির্বাহ করে গড়ে তুলেছেন সুখের সংসার। ভাইয়েরা কৃষি কাজ করে জীবন-জীবিকা নির্বাহ করলেও রুহুল আমিন কৃষি কাজের পাশাপাশি তিনি বাবার পেশা ও ঘানি শিল্পটাকে বেঁচে নিয়েছেন।
দীর্ঘ ৫০ বছর ঘানি শিল্পের আয় দিয়েই তিনি ১ হাজার থেকে ২ হাজার টাকা দরে ৫ বিঘা ও ৬ লাখ টাকা দরে ১০ বিঘা জমি ক্রয় করেছেন জীবন যুদ্ধের এক লড়াকু সৈনিক রুহল আমিন। বর্তমানে প্রতি বিঘার জমির মূল্য ১০ লাখ। ১০ লাখ টাকা জমির মূল্য ১৫ বিঘার দাম হয় দেড় কোটি টাক।
রুহুল আমিন (৭২) জানান, এ শিল্প যেন আমার রক্তের প্রতিটি কনিকায় মিশে আছে। গরু দিয়ে ঘানি টেনে খাঁটি সরিষার তেল বানানো তাদের বাপ-দাদার পেশা। আমার বাবাও সরিষার ঘানি টেনে জীবন-জীবিকাসহ আমাদের পাঁচ ভাইকে মানুষ করেছেন। অন্য ভাইয়েরা অন্য পেশায় যুক্ত হলেও আমি আমার বাবার পেশাটাকে বেঁচে নিয়েছি। প্রায় ৫০ বছর ধরে এ শিল্পটা বেঁচে রেখেছি। মাত্র দুই হাজার টাকা দিয়ে শুরু করেছি। আল্লাহর অশেষ কৃপায় স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে অনেক সুখেই আছি।
প্রতিবেশী হাবিবুর রহমান সঞ্জু ও বজলু রশিদ জানান, তিনি একজন কর্মঠ ব্যক্তি। এই বয়সে এখনো তিনি কৃষি কাজের পাশাপাশি ঘানি টানছেন। এটা এক বিরল দৃষ্টান্ত। এই শিল্পদিকে তিনি অনেক কিছুই করেছেন। এক একজন চাকুরী জীবী মানুষের পক্ষে সম্ভব নয়। তিনি ঐ পরিবারের একজন আদর্শ বাবা। তিনি বেঁচে থাকতেই সব ছেলেকে জমিসহ পাকা বাড়ী করে দিয়ে বাবার দায়িত্ব পালন করেছেন। সত্যিই গর্ভের বিষয়। মানুষটাও খুবেই সহজ সরল। তিনি কর্মের মাঝে বেঁচে থাক এই কামনায় করছি।
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.