পার্বত্য এলাকায় শান্তি, উন্নয়ন ও সেবামূলক কাজে আর্মির প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম

সাইফুল ইসলাম: বান্দরবান জেলা প্রতিনিধি: 
দেশের স্বাধীনতা, অখণ্ডতা এবং পার্বত্য চট্টগ্রামের বান্দরবান, রাঙ্গামাটি ও খাগড়াছড়ি জেলার গণমানুষের সার্বিক নিরাপত্তা, শান্তি, সম্প্রীতি ও উন্নয়নের ধারাবাহিকতাসহ সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য এ অঞ্চলের মানুষের গণদাবিতে পরিণত হয়েছে, সেনাবাহিনীর প্রয়োজনীয়তার কথা। সেনাবাহিনীর হাতে পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের সার্বিক উন্নয়নের প্রশাসনিক দায়িত্ব অর্পণসহ তাদের প্রত্যাহারকৃত সেনা ক্যাম্পগুলো দ্রুত পুনঃস্থাপনের কথা।
পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির (শান্তি চুক্তি) পর সেনাবাহিনীর ক্ষমতা খর্ব করা হয়েছে। ব্যারাকে ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছে ২৩৯টি সেনা ক্যাম্প। এর কারণে অরক্ষিত হয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন অংশ। সৃষ্টি হয়েছে বিভিন্ন বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর। পাহাড়ের আনাচে-কানাচে অবৈধ অস্ত্রের ঝনঝনানি বেড়েছে। পাহাড়ের সর্বত্র চাঁদাবাজি, অপহরণ এবং খুন-গুম চলমান৷ এমন পরিস্থিতিতে পার্বত্য চট্টগ্রামে নতুন নতুন নিরাপত্তা সংকট ও ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে। তাই দ্রুত পার্বত্য চট্টগ্রামের দুর্গম এলাকায় মানুষের নিরাপত্তার জন্য সেনাক্যাম্প জরুরি প্রয়োজন বলে অনেকেই মনে করে। পার্বত্য চট্টগ্রামে বিভিন্ন সশস্ত্র বাহিনীর অন্যায়-অবিচার বন্ধসহ পাহাড়ি বাঙালির সম-অধিকার নিশ্চিতের তদারকির দায়িত্ব সেনাবাহিনীর হাতে দেওয়া হোক। পার্বত্য জেলা সমুহের প্রশাসন সেনাবাহিনীর তদারকিতে ন্যস্ত থাকলে এ অঞ্চলের সমস্যা/সংকট অনেকটাই কমে যাবে। শান্তি ফিরে আসবে পাহাড়ে। সম্প্রীতি বৈষম্য যে চরম আঁকারে ধারণ করেছে তা থেকেই বের হতে সেনাবাহিনীর হাতে দায়িত্ব দেওয়ার বিষয়টি এখন গণদাবিতে পরিণত হয়েছে।
পার্বত্য চট্টগ্রামের সকল নেতৃত্ব, কর্তৃত্ব ও ক্ষমতা উপজাতি নেতাদের মধ্যে সীমাবদ্ধ। বাঙ্গালীরা ক্ষমতাহীনতায় ভূগছেন। পার্বত্য চট্টগ্রামের বিরাজমান রাজনৈতিক সংকট নিরসনে পাহাড়ি নেতারা আন্তরিক হলে পাহাড়ের মানুষের নিরাপত্তার ঝুঁকি সৃষ্টি ও এতো দল ও আঞ্চলিক এত দলীয় সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর জন্ম হতো না। তাদের চাঁদার টাকায় ওরা চলে। পাহাড়ি নেতারা রাজনৈতিক কারণে ও সরকারি সুযোগ-সুবিধা গ্রহণের জন্য বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সাথে জড়িত। বাস্তবতা হলো সকলেই চিন্তায়, চেতনায় ও আদর্শিকভাবে একতাবদ্ধ। পার্বত্য জেলায় বাঙ্গালী ও সেনাবাহিনী থাকুক পাহাড়ি অধিকাংশ নেতারা তা মেনে নিতে পারেনা বা সমর্থন করে না। তার কারণ, এদের দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্ন পাহাড়ের স্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠায় মূল প্রতিবন্ধকতা হচ্ছে বাঙ্গালী ও সেনাবাহিনী। পাহাড়ি সন্ত্রাসী গোষ্ঠীদের অসাংবিধানিক কোন দাবী বাঙ্গালী জনগণ মেনে নেবেনা মর্মে আন্দোলন সংগ্রাম ও মিছিল করে যাচ্ছে পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ। পার্বত্য চট্টগ্রামের সঙ্গে রয়েছে প্রতিবেশি দু’টি দেশের সীমান্ত এলাকা৷ সূত্রের তথ্য মতে, ১৭৪ কিলোমিটার এলাকায় কাঁটাতারের বেড়া নেই৷ উপজাতি বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর হাতে অবাধে সীমান্ত দিয়ে আসছে ভারী অস্ত্রশস্ত্র, গোলাবারুদ ও জীবন ধ্বংসকারী বিভিন্ন রকমের মাদকদ্রব্য। বাড়ছে চোরাকারবারি সহ নানা অপরাধ। এসকল কিছু পাহাড়ের সন্ত্রাসীদের মাধ্যমে পৌছে যাচ্ছে সমতলে। এছাড়াও, সন্ত্রাসীরা এসব ভারী অস্ত্র ও গোলাবারুদ পার্বত্য বাঙ্গালী এবং রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ব্যবহার করছে প্রতিনিয়ত। যার ফলে দিন দিন পার্বত্য চট্টগ্রামের লাগাম হারাচ্ছে রাষ্ট্র।
তাই সেনাবাহিনীর বিকল্প পাহাড়ে অন্য কিছু চিন্তা করা রাষ্ট্র ও সার্বভৌমত্বের জন্য ক্ষতিকর। পার্বত্য চট্টগ্রামের  সন্ত্রাসবাদ দমনে সেনাবাহিনীকে স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ  ও প্রশাসনিক দায়িত্ব দেওয়া হলে পাহাড়ের শান্তি-শৃংখলা, উন্নয়ন এবং জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে বলে মনে করছে সচেতন জনগণ।

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.