আবরার হত্যা: দায় স্বীকার করে অনিকের জবানবন্দি

আদালত প্রতিবেদক
অনিক সরকার

বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যা মামলায় বুয়েট ছাত্রলীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক মো. অনিক সরকার ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে দোষ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

শনিবার ঢাকা মহানগর হাকিম আতিকুল ইসলাম অনিকের জবানবন্দি গ্রহণ করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

জানা গেছে, আবরার হত্যাকাণ্ডের বর্ণনার সঙ্গে তার নিজের জড়িত থাকাসহ অপর আসামিদের নাম প্রকাশ করেছেন।

অন্যদিকে এই মামলায় গ্রেপ্তার আবরারের সহপাঠী মাজেদুর রহমান ওরফে মাজেদের পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত।

এদিন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ঢাকা মহানগর ডিবির লালবাগ জোনাল টিমের পুলিশ ইন্সপেক্টর মো. ওয়াহিদুজ্জামান আসামি মাজেদের দশ দিনের রিমান্ড চেয়ে এবং অনিক সরকারের দোষ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি গ্রহণের জন্য অবেদন করেন।

মামলাটিতে গত ৮ অক্টোবর অনিকসহ দশ শিক্ষার্থীর পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত। ওই রিমান্ড চলমান অবস্থায় অনিক আদালতে দোষ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিলেন।

এর আগে মামলাটিতে বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের উপ-সমাজসেবা বিষয়ক সম্পাদক ইফতি মোশাররেফ সকাল ও  ক্রীড়া সম্পাদক মো. মেফতাহুল ইসলাম জিয়নও স্বীকারোক্তি করেছেন।

এদিকে আসামি মাজেদের রিমান্ড আবেদনে তদন্তকারী কর্মকর্তা উল্লেখ করেন, অনিক এজাহারনামীয় ৮ নম্বর আসামি। মামলার তদন্ত, সাক্ষ্য প্রমাণে ও ভিডিও ফুটেজ পর্যালোচনায় ঘটনার সঙ্গে তার জড়িত থাকার সম্পর্কে যথেষ্ট সাক্ষ্য-প্রমাণ পাওয়া গেছে। ইতিপূর্বে গ্রেপ্তারকৃত আসামি ইফতি মোশারফ সকাল আদালতে দেয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এই আসামির নাম প্রকাশ করেছেন। তাই মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে অন্যান্য আসামিদের শনাক্ত এবং গ্রেপ্তারে জন্য এই আসামিদের ১০ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন।

রিমান্ড শুনানিকালে রাষ্ট্রপক্ষে পুলিশের জিআরও এসআই মাজহারুল ইসলাম ও সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর হেমায়েত উদ্দিন খান হিরণ রিমান্ড আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন।

তবে মাজেদের পক্ষে কোনো আইনজীবী না থাকায় রাষ্ট্রপক্ষে একতরফা রিমান্ড আবেদনের শুনানির পর ঢাকা মহানগর হাকিম নিভানা খায়ের জেসী পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। একই সঙ্গে মঞ্জুরকৃত রিমান্ড আট কার্যদিবসের মধ্যে কার্যকর করার নির্দেশ দেন।

মামলাটিতে বর্তমানে বুয়েট ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুহতামিম ফুয়াদ, সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী হাসান রবিন, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক মো. অনিক সরকার, কর্মী  মুনতাসির আল জেমি, সদস্য মো. মুজাহিদুর রহমান, কর্মী খন্দকার তাবাখখারুল ইসলাম তানভির, গ্রন্থ ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক ইসাতিয়াক আহম্মেদ মুন্না, মো. মনিরুজ্জামান মনির, আকাশ হোসেন, সাসছুল আরেফিন রাফাত, অমিত সাহা  ও হোসেন মোহাম্মাদ তোহা রিমান্ডে রয়েছেন।

গত ৬ অক্টোবর রাতে বুয়েটের শেরে বাংলা হলে একটি ফেসবুক স্ট্যাটাসকে কেন্দ্র করে আবরার ফাহাদকে নৃশংসভাবে পিটিয়ে হত্যা করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এ ঘটনায় আবরারের বাবার দায়ের করা মামলায় আসামি করা হয়েছে ১৯ জনকে।

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.