- জনহয়রানি মূলক কর্মকান্ড থেকে বিরত থাকতে ওয়ার্ড বিএনপি’র মতবিনিময় সভা - September 16, 2024
- ঈদ-ই মিলাদুন্নবি (স.) উপলক্ষে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত - September 16, 2024
- সরিষাবাড়ী সালেমা খাতুন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ২৮ জন শিক্ষক -কর্মচারীর অনাস্থা - September 16, 2024
যেকোনো দেশ ও সম্প্রদায়ের মধ্যে সম্পর্কের ক্ষেত্রে পারস্পরিক আস্থা ও শ্রদ্ধাই প্রধান বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এজন্য সবাইকে ভুল ধারণা ও ভুল বোঝাবুঝি কাটিয়ে উঠতে আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
শুক্রবার বিকালে ভারতের নয়া দিল্লিতে ইন্ডিয়া ইকোনমিক ফোরামের সমাপনী অধিবেশনে কো-চেয়ার হিসেবে দেয়া বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী দক্ষিণ এশিয়ার বিদ্যমান ভূ-রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনায় চার দফা প্রস্তাব তুলে ধরেন। এর মাধ্যমে দক্ষিণ এশিয়া সংঘবদ্ধ, বন্ধত্বপূর্ণ ও প্রতিযোগিমূলক অঞ্চল হিসেবে পারস্পরিক বৈশ্বিক কল্যাণে অন্যান্য অঞ্চলের সঙ্গে যোগাযোগ প্রতিষ্ঠিত হবে বলে মনে করেন তিনি।
সবাইকে একে অপরের হাত ধরার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘অনুন্নত দেশ বা সমাজ যাতে পিছিয়ে না পড়ে। তারুণ্যের আকাঙ্ক্ষা ও চাহিদাকে মূল্য দিতে হবে। আমাদের জ্ঞান-অভিজ্ঞতা-দক্ষতা-বিনিয়োগের মাধ্যমে দক্ষিণ এশিয়াজুড়ে একে অপরের হাত ধরে রাখতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দক্ষিণ এশিয়াকে অবশ্যই সংযুক্ত, বন্ধুসুলভ ও প্রতিযোগিতাসক্ষম অঞ্চল হিসেবে গড়ে উঠতে হবে, যা অন্য অঞ্চলের সঙ্গে সেতুবন্ধনে সদা প্রস্তুত থাকবে।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আসুন আমরা আমাদের জনগণের স্বার্থে আঞ্চলিক রাজনৈতিক বাস্তবতায় ভারসাম্য আনি। স্বল্পমেয়াদী অর্জনের জন্য আমরা দীর্ঘমেয়াদী স্বার্থ বিসর্জন দিতে পারি না।’
সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারো সঙ্গে শত্রুতা নয়- বঙ্গবন্ধুর এ নীতি অনুসরণ করে আঞ্চলিক সম্পর্ক রক্ষার অব্যাহত প্রচেষ্টার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, অভিন্ন নদীর প্রবহমানতা নিয়ে ভারত ও বাংলাদেশ এখন কাজ করছে। আন্তঃদেশীয় গ্রিড সংযোগের মাধ্যমে ভারত থেকে বিদ্যুৎ কেনা হচ্ছে।
তার মতে, এধরনের সহযোগিতামূলক সংস্কৃতি আমাদের রাজনীতি, অর্থনীতি ও সমাজজুড়ে অপরিহার্য। অন্যদিকে, আমাদের বেসরকারি খাতগুলো একে অপরের সঙ্গে স্বচ্ছ ও ন্যায্যভাবে প্রতিযোগিতা করবে।
সঞ্চালকের এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া ও অন্যান্য অঞ্চলের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্যের উন্নয়নে সংযোগ প্রতিষ্ঠার ওপর অগ্রাধিকার দিচ্ছে।
তার সরকার ১৯৬৫ সালের পরে বন্ধ হয়ে যাওয়া সংযোগগুলো পুনরায় চালু করার জন্য চেষ্টা করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা সবসময় এ নিয়ে চিন্তা করি। আমরা এ অঞ্চল এবং এর বাইরের অঞ্চলের মধ্যে সেতুবন্ধ প্রতিষ্ঠা করতে পারি।’
তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশ এশিয়ান হাইওয়ে ও এশিয়ান রেলওয়ে প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা পালন করছে।
দারিদ্র্যকে এ অঞ্চলের অভিন্ন শত্রু অভিহিত করে তিনি বলেন, ‘আমাদের, এ অঞ্চলের সকল দেশের এই হুমকির বিরুদ্ধে একযোগে লড়াই করা উচিত। আমাদের এটি করার সামর্থ্য রয়েছে এবং আমরা নিশ্চই এটি করবো।’
এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু এ অঞ্চলের সমৃদ্ধির জন্য সংযোগ বৃদ্ধির গুরুত্ব অনুধাবন করেছিলেন।
রোহিঙ্গা ইস্যু প্রশ্নে শেখ হাসিনা বলেন, বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গারা বাংলাদেশের জন্য বোঝা হয়ে দেখা দিয়েছে।
বঙ্গবন্ধু দেশের মানুষকে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত করে মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে দেশ স্বাধীন করেছিলেন উল্লেখ করে শেখ হাসিনা মানুষের মৌলিক চাহিদা নিশ্চিত করতে বঙ্গবন্ধুর পদাঙ্ক অনুসরণ করে তার সরকারের গৃহীত পদক্ষেপসমূহ তুলে ধরেন।
সিঙ্গাপুরের উপ-প্রধানমন্ত্রী দারিদ্র্য বিমোচন ও সহযোগিতা বিনিময়ের মাধ্যমে এ অঞ্চলকে আরও শক্তিশালী করার জন্য একযোগে কাজ করতে শেখ হাসিনার ধারণার প্রশংসা করেন।
অধিবেশনে সমাপনী বক্তব্য দেন ওয়ার্ল্ড ইকোনোমিক ফোরামের প্রেসিডেন্ট বোর্জ বেন্ডে। প্যানেলিস্ট হিসেবে বুকিং ডটকম প্রধান জিলিয়ান ট্যানস, সিঙ্গাপুরের উপপ্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রী হ্যাং সুই কিট, সেকোইয়া ক্যাপিটাল ইন্ডিয়ার ব্যবস্থাপনা পরিচালক শৈলেন্দ্র সিং ও অ্যাপোলো হসপিটাল এন্টারপ্রাইজ এক্সিকিউটিভ ভাইস-চেয়ারম্যান শোভানা কামেনিনি।
প্রধানমন্ত্রী বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের (ডাব্লিউইএফ) ইন্ডিয়া অর্থনৈতিক শীর্ষ সম্মেলনে যোগদানের জন্য চার দিনের সরকারি সফরে বৃহস্পতিবার নয়া দিল্লি যান। আগামীকাল শনিবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে তার বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.