জাল ভোট দিতে না দেয়ায় সরিষাবাড়ীতে দুই ভোট গ্রহন কর্মকর্তাকে মারধর করার অভিযোগ

0

সরিষাবাড়ী প্রতিনিধিঃ

পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রথম ধাপে জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে ভাইস চেয়ারম্যান (মহিলা) প্রার্থী ফুটবল প্রতিকে জাল ভোট দিতে না দেয়ায় দুই ভোট গ্রহন কর্মকর্তাকে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে। গতকাল রোববার পৌর সভার বাউসী বাঙ্গালী উচ্চ বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে।

ভোট গ্রহন কর্মকর্তা পিংনা সুজাত আলী ডিগ্রী কলেজের ডেমোনেষ্টেটর আব্দুল হাকিম ও বাউসী বাঙ্গালী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক যুবায়ের আহম্মেদ পাঠান জানান,তারা দু জন সকাল আনুমানিক সাড়ে নয়টার দিকে পৌর সভার বাউসী বাঙ্গালী উচ্চ বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে পোলিং কর্মকর্তা হিসেবে ৪ নং কক্ষে বসে ছিলেন। এ সময় মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী জলি আকতার (ফুটবল) প্রতিকের সর্মথক আশরাফ আলী খান ও সেলিম খানের নেতৃত্বে ৮/১০ জন তাদের প্রার্থী পক্ষে প্রথম দফায় জাল ভোট দিয়ে চলে যায়। কিছুক্ষন পরে তারা আবারও জাল ভোট দেয়ার জন্য ব্যালট পেপার দাবী করেন। দাবীকৃত ব্যালট পেপার ওই দুই কর্মকর্তা দিতে অস্বীকৃতি জানালে প্রথমে তাদের শার্টের কলার ধরে টানা হেচড়া সহ মারধর করে প্রার্থীর সর্মথকরা। এ ঘটনার খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সহকারী রির্টানিং অফিসার সাইফুল ইসলাম,সরিষাবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ মাজেদুর রহমান সহ পুলিশ সদস্যরা ঘটনা স্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনেন। দুই ভোট গ্রহন কর্মকর্তাকে মারধরকারীদের বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা নেয়া হবে বলে প্রশাসনের পক্ষ আশ্বস্থ করা হয়েছে।

উপজেলা নির্বাচন অফিস সুত্রে জানা গেছে উপজেলায় মোট ৮৮টি ভোট কেন্দ্রে সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ করা হয়। শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হলেও অধিকাংশ কেন্দ্রে ভোটারদের উপস্থিতি নেই বললেই চলে। সকাল ১১ টা পর্যন্ত পৌর সভার কামরাবাদ ভোট কেন্দ্রে ,আর ডি এম পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়,বাউসী বাঙ্গালী উচ্চ বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে গিয়ে দেখা গেছে, ভোট কেন্দ্র আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য উপস্থিত থাকলেও ভোটারদের লাইন চোখে পড়েনি।কিন্তু প্রাথীদের কয়েক জন কে ভোট কেন্দ্রে আনাগুনা করতে দেখা গেছে।পুরুষ ও মহিলাদের উপস্থিতী ৪/৫% হতে পারে বলে সরকারের গোয়েন্দা দপ্তরের মন্তব্য। পুরুষ ভোটারদের উপস্থিতি একেবারে নেই বললেই চলে। এসব কেন্দ্রে দুই একজন করে নারী ভোটার ও প্রার্থীদের কর্মী-সমর্থকদের দূ-একজনকে ভোট দিতে দেখা গেছে।

অপরদিকে ফুটবল প্রতিকের প্রার্থী জেলির প্রতিনিধি,ইউপি সদস্য মিজানুর রহমান ও আরামনগর কামিল মাদরাসার শরীরচর্চা শিক্ষক মুমিনুল ইসলাম কিসমতের নেতৃত্বে ১০-১২ জন গত শনিবার রাত ১১ টায় বলারদিয়ার সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কেন্দ্রে ভোট সিল মারার প্রস্তুতি নিয়ে যায় । সংবাদ পেয়ে এ প্রতিবেদক মাসুদুর রহমান কেন্দ্রের দিকে গেলে তারা বলারদিয়ার সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কেন্দ্র স্থান ত্যাগ করে। পরে আরামনগর কামিল মাদরাসা ও বালিকা দাখিল মাদরাসার কেন্দ্রে ভোট কারচুপি করতে যান বলে তথ্য পাওয়া যায়। এ ছাড়া সরিষাবাড়ী স্থানীয় ভোটাররা ভোট কেন্দ্রে না গেলেও ভোট সম্পন্ন হয় । ফুটবল প্রতীকের প্রার্থী জেলির নেতা কর্মীরা সকল কেন্দ্র গুলোতে গভীর রাতে ৫০% ভোট কারচুপি করে সিল মেরে নিয়েছে বলে স্থানীয় ভোটাররা বলাবলি করছে। পুনরায় নির্বাচন দিয়ে সঠিক ভাবে ,সুষ্ঠু ও শান্তিপুর্ণভাবে ভোট গ্রহণ করার জন্য সরিষাবাড়ী উপজেলা প্রশাসন ,জামালপুর জেলা প্রশাসন ও সরকারের নিকট দাবী জানিয়েছেন স্থানীয় ভোটাররা ও সচেতন মহল।

ভোট কেন্দ্রে ভোটারদের উপস্থিতি বিষয়ে বাউসী বাঙ্গালী উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার মোজআম্মেল হক বলেন,কাজ কর্মের জন্য তেমন ভাবে ভোটারগন ভোট দিতে আসেননি। ফুটবল প্রতিকের জাল ভোট দিয়ে আবারও জাল ভোট দিতে আসলে পুনরায় জাল ভোট দিতে না দেয়ায় তাদেরকে কলার ধরে টানা হেচড়া ও মারধর করেছে।

জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাচন অফিসার ও সহকারী রির্টানিং অফিসার সাইফুল ইসলাম জানান, দুপুর ১২ টা পর কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। তবে ভোট সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন স¤পন্ন হয়েছে ।

Leave A Reply