বগুড়া শেরপুরে জ্বীন হাজির করে চিকিৎসা, প্রতারিত সাধারণ মানুষ

0

সেলিম রেজা, বগুড়া প্রতিনিধি ঃ
বিজ্ঞানের এই উৎকর্ষতার যুগে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা যখন সর্বোচ্চ ডিগ্রী নিয়ে রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছে, সেখানে বগুড়া শেরপুরের চরকল্যাণী গ্রামের শাহিন আলম (২০) নামের এক কবিরাজ জ্বীন হাজির করে সর্বরোগের চিকিৎসা দিয়ে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, উপজেলার সুঘাট ইউনিয়নের চরকল্যাণী গ্রামের মৃত রেজাউল করিমের ছেলে শাহিন আলম কিছুদিন আগে এলাকার বিভিন্ন বাড়িতে বছর চুক্তিতে কিষাণের কাজ করত। পাশের খানপুর ইউনিয়নের শালফা গ্রামের শাজাহান মোল্লার বাড়িতে গত ৩ বছর আগে বাৎসরিক চুক্তিতে কিষাণ (চলতি ভাষায় কামলা) হিসাবে কাজ করার সময় হঠাৎ একদিন সে নিখোঁজ হয়ে যায়। এক সপ্তাহ পর সে বাড়িতে ফিরে আসে এবং জানায় তার সাথে পরীস্থানের কোন এক পরীর সাথে বিয়ে হয়েছে। সেই পরী তাকে মানুষের চিকিৎসা করার পরামর্শ দিলে তারপর থেকে সে নিজেকে কবিরাজ দাবি করে নিজ বাড়িতে চিকিৎসা শুরু করে দেয়। কথিত ওই কবিরাজ গাছের শেকড় বাকল দিয়ে কোন রকম পরিমাপ ছাড়াই ঔষধ তৈরি করে শ্বাসকষ্ট, পাইলস্, মাথার যে কোন সমস্যা, গ্যাসট্রিক, পিঠ-কোমড় ও হাটুর ব্যথাসহ বিভিন্ন রোগের চিকিৎসা দিয়ে আসছে। এমবিবিএস চিকিৎকদের মতো সেও প্রথম ভিজিট নেয় ৩শ টাকা এবং পরবর্তীতে ৩ থেকে ৫ হাজার টাকা নিয়ে চুক্তিতে চিকিৎসা করে। এ ভাবেই গত ৩-৪ বছর ধরে সাধারণ মানুষদের ভুয়া চিকিৎসা দিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে বলে এলাকাবাসিরা জানিয়েছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকার অনেকেই জানিয়েছেন – দুই বছর আগেও তার দিনাতিপাত ছিল খুবই শোচনীয়। এখন রোগীদের কাছ থেকে চিকিৎসার নামে প্রতারণামূলকভাবে টাকা হাতিয়ে নিয়ে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হয়েছে। এ ব্যাপারে কবিরাজ শাহীন আলম বলেন, পরীরা আমাকে বলেছে তোকে আর কামলা-কৃষান দিতে হবেনা। আজ থেকে তুই মানুষের চিকিৎসা করবি। তাই আমি কবিরাজি শুরু করে দিয়েছি। এ ব্যাপারে শেরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আব্দুল কাদের বলেন – এ ধরনের চিকিৎসা সম্পূর্ন অপচিকিৎসা। যার কোন বৈজ্ঞানিক ব্যাখা নেই। এ প্রসঙ্গে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ লিয়াকত আলী শেখ বলেন – ওই কবিরাজের বিষয়ে অনুসন্ধান করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Leave A Reply