নিজের কিডনী দিতে চেয়েও সন্তানকে বাঁচাতে না পাড়ার শঙ্কায় উলিপুরের এক মা

0

সাইফুর রহমান শামীম,কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি :

সন্তান যত জনই হোক না কেন সব সন্তানই মায়ের বুকের ধন। কেন না সব সন্তানই মায়ের নারী ছেড়া ধন। এমনই একজন মা আঞ্জুয়ারা বেগম। তার চতুর্থ সন্তান সিরাজুল ইসলামকে নিজের একটি কিডনী দিতে চেয়েও সন্তানকে বাঁচাতে পারবেন কি না সে শঙ্কা নিয়েই দিন কাটাচ্ছেন রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সন্তানের বেডের পাশেই। কেন না ছেলে সিরাজুল ইসলামের দুটি কিডনীই ড্যামেজ হয়ে যাওয়ায় গত ৪ মাস ধরে হাসপাতালে ছেলের পাশেই পড়ে আছেন তিনি।

মা তার সন্তানের জন্য একটি কিডনী দিতে চেয়েও তা প্রতিস্থাপন করাতে পারছেন না। এরজন্য প্রয়োজন ১০ লাখ টাকা। কিন্তু মা আঞ্জুয়ারা বেগমের রাজমিস্ত্রী স্বামীর পক্ষে তা জোগাড় করা কোন মতেই সম্ভব হচ্ছে না। এ অবস্থায় সন্তানকে বাঁচাতে দেশবাসীর কাছে সাহায্যের আবেদন করেছেন তিনি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার বুড়াবুড়ী ইউনিয়নের সাতভিটা গ্রামের বাসিন্দা মো: শহিদুল ইসলামের পুত্র সিরাজুল ইসলাম। নিজের বসতভিটা ধরলা নদীর ভাঙ্গনের কবলে বিলীন হয়ে যাওয়ায় এখন বাস করছেন সাতভিটা গ্রামে অন্যের দেয়া এক টুকরো জমিতে। শহিদুল ইসলামের ৫ ছেলে ২ মেয়ের মধ্যে সিরাজুল ইসলাম চতুর্থ সন্তান। সিরাজুল ইসলামের বয়স ২২ বছর। সংসারের অভাবে সব ছেলেরাই শ্রমিকের কাজ করছেন ঢাকা ও চট্রগ্রামে। অন্যান্য ভাইদের মতো সংসারের দু:খ খোচাতে সিরাজুল ইসলামও শ্রমিকের কাজ শুরু করে চট্রগ্রামে। সেখানে জাহাজ ভাঙ্গার কাজ করতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে সে। নিজের গা ফোলা দেখে মাকে ফোন করে বলে- মা যদি তোমাকে কিছু বলে থাকি তাহলে মাফ করে দিও। মোবাইল ফোনে ছেলের এমন কথা শুনে মা চমকে উঠেন। ছেলেকে বাড়িতে নিয়ে এসে এক সপ্তাহ পর চিকিৎসকের নিকট নিলে চিকিৎসক জানান যে তার দুইটি কিডনীই ড্যামেজ হয়ে গেছে।

সিরাজুল ইসলামের মা আঞ্জুয়ারা বেগম বলেন, প্রয়োজনে দুটি কিডনী দিয়ে হলেও আমি আমার সন্তানকে বাঁচাতে চাই।

সিরাজুল ইসলামের বাবা শহিদুল ইসলাম জানান, ছেলের কিডনী প্রতিস্থাপনের জন্য ১০ লাখ টাকা লাগবে শোনার পর থেকেই তিনি সাহায্যের জন্য ছুটছেন চেয়ারম্যান, মেম্বারসহ স্থানীয় বিত্তবানদের দ্বারে দ্বারে। কেন না তার এবং তার বাকী সন্তানদের সবকিছুই বিক্রী করে দিলেও ১ থেকে দেড় লাখ টাকার বেশি জোগাড় করার সামর্থ হচ্ছে না। এ অবস্থায় হত ৪ মাস ধরে ছেলেকে বাঁচানোর আশায় মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরেও কোন লাভ হয়নি। মানুষের কাছে দুই চারশ যা পাচ্ছেন তা চলে যাচ্ছে রংপুরে ছেলের চিকিৎসার পিছনে।

এ প্রতিবেদকের হাত ধরে কাঁদতে কাঁদতে সন্তানকে বাঁচাতে দেশবাসীর কাছে সাহায্যের আবেদন করেছেন তিনি। দেশের বিত্তবানরা সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিলেই হয়তো বেঁচে যাবে তার ওরশ জাত সন্তান।

মো: সিরাজুল ইসলাম রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কিডনী রোগ বিশেষজ্ঞ ও বিভাগীয় প্রধান ডা: মোফাসসের আলম এর অধীনে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

তাকে কেউ সাহায্য করতে চাইলে তার বড় ভাই মো: আশরাফুল আলমের ০১৭২৯৮৩৪০০৯ নাম্বারে অথবা তার আরেক বড় ভাই মো: রাশেদুল ইসলামের ০১৭৪৬০৬৮৯৫৮ নাম্বারে যোগাযোগ করতে পারবেন।

Leave A Reply